|
|
|
|
সঙ্কটে বিজেপি |
জেল থেকে বেরিয়েও বেগ দিচ্ছেন ইয়েদুরাপ্পা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জেলে থাকলে এক রকম অস্বস্তি। জেলের বাইরে এসে আর এক রকম। বিজেপির বিড়ম্বনা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়েই দিলেন ইয়েদুরাপ্পা।
শর্তসাপেক্ষে জামিন পাওয়ার পর থেকেই কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতৃত্বের উপর চাপ বাড়ানো শুরু করেছেন। নিজে মুখে কিছু না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতারা দাবি তুলতে শুরু করেছেন, ইয়েদুরাপ্পাকে দলের কেন্দ্রীয় দায়িত্ব দেওয়া হোক কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর পদ ফিরিয়ে দেওয়া হোক। দাবি মানা না হলে বিজেপি ছেড়ে নতুন দল গড়ার প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিতে শুরু করেছেন তাঁরা। এমনকী বিজেপির শরিক জেডি(ইউ)-ও ইয়েদুরাপ্পাকে বিজেপি ছেড়ে তাদের দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীরামালু ইতিমধ্যেই বল্লারীতে আসন্ন উপনির্বাচনে বিজেপির
পরিবর্তে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। সুতরাং ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে যথেষ্টই চিন্তায় রয়েছে দল।
কর্নাটকের দায়িত্বে থাকা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ধর্মেন্দ্র প্রধান স্বীকার করছেন, “ইয়েদুরাপ্পাকে নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে বটে। কারণ, তিনি কর্নাটকে যথেষ্টই প্রভাবশালী। কী ভাবে তাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সে ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন।” দল অবশ্য এখনই ইয়েদুরাপ্পাকে কোনও পদ দিতে আগ্রহী নয়। জেল থেকে বেরোনোর সময় ইয়েদুরাপ্পাকে স্বাগত জানাতে হাজার হাজার অনুগামী উপস্থিত থাকলেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কেউ ছিলেন না। দলের যুক্তি, সবেমাত্র দুর্নীতির মামলায় তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। এখনও আদালত তাঁকে ক্লিনচিট দেয়নি। বিজেপির মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেনের প্রশ্ন, “এখনই সংগঠনে কোনও দায়িত্ব দেওয়ার প্রশ্ন উঠছে কোথা থেকে?”
ইয়েদুরাপ্পা স্বভাবতই দাবি করছেন, “আমি নির্দোষ। অযথা আমাকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।” তিনি নতুন কোনও দল গড়ার কথা অবশ্য বলেননি। তাঁর বক্তব্য, “বিজেপিকে আমি একা হাতে গড়ে তুলেছি। দক্ষিণে প্রথম রাজ্যে আমার জন্যই দল এখন ক্ষমতায়। ফলে নতুন দল গড়ার কোনও প্রশ্নই নেই। আমি বিজেপি ও রাজ্যের মানুষের সেবা করে যাব।” কিন্তু মুখে এ কথা বলেও যে ভাবে নিজের অনুগামীদের দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদ ফেরত পাওয়ার জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছেন ইয়েদুরাপ্পা, তা নতুন করে কপালে ভাঁজ ফেলেছে বিজেপি নেতৃত্বের।
আডবাণীর দুর্নীতি-বিরোধী রথযাত্রা যখন কর্নাটকে পৌঁছয়, তখন তিনি বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধেও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। বিজেপির দুর্নীতির সঙ্গেও যে কোনও ভাবে আপস করা হবে না, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি। কারাবন্দি ইয়েদুরাপ্পার নির্দেশে তাঁর ঘনিষ্ঠ ১১ জন মন্ত্রী কিন্তু কর্নাটকের সেই সভামঞ্চে উপস্থিত থাকেননি। বিজেপির এক নেতার কথায়, “বিজেপির কোনও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দুর্নীতির দায়ে জেলে গিয়ে এমনিতেই দলের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু জেলে থাকলেও তাঁর প্রভাব কতটা, ইয়েদুরাপ্পা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। এখন তিনি জেল থেকে বেরিয়ে নতুন করে চাপ বাড়ানো শুরু করেছেন। ইয়েদুরাপ্পাকে যদি চটিয়ে দেওয়া হয়, কর্নাটকে সরকারও ফেলে দিতে পারেন তিনি।” ইয়েদুরাপ্পা অবশ্য দাবি করেছেন, “আমার সঙ্গে আডবাণীর কোনও বিরোধ নেই। অটলবিহারী বাজপেয়ীর পর তিনিই আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতা। খুব শীঘ্রই আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করব।” |
|
|
|
|
|