কেদার-বদরি যাত্রা এ বার সুগম করছে রেল। ট্রেনে হরিদ্বার থেকে হৃষীকেশ হয়ে রুদ্রপ্রয়াগ ছুঁয়ে সোজা কর্ণপ্রয়াগ। রুদ্রপ্রয়াগ থেকে মন্দাকিনীর পাড় ধরে গৌরীকুণ্ড হয়ে কেদারনাথ বা কর্ণপ্রয়াগ থেকে অলকানন্দার প্রবাহপথ ধরে যোশীমঠ হয়ে বদ্রিনাথ পৌঁছনো যাবে অনেক কম সময়ে, অনেক বেশি নিশ্চিন্ততায়। আজ গৌচরে প্রস্তাবিত সেই রেলপথেরই শিলান্যাস করলেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি।
উত্তরাখণ্ডে এখন কেবল হৃষীকেশ, হরিদ্বার ও দেরাদুন বা কাঠগোদাম ও টনকপুর-সহ সমতল ঘেঁষা এলাকাগুলিই রেলপথের সঙ্গে যুক্ত। মূলত সড়ক যোগাযোগই ভরসা, কিন্তু সেই সড়কযাত্রায় অনেক সময়েই ঘটে বিঘ্ন। হৃষী কেশ থেকে শুরু হয় পাহাড়িপথে যাত্রা, স্বাগত জানায় শিবালিক। পথের ধারে সাইনবোর্ডে লেখা “আপ আভি পার্বতী কি গোদ মে হ্যায়!” কিন্তু পার্বতীর সেই কোল নিশ্চিন্ত যাত্রার ভরসা দিতে পারে কোথায়? প্রায়ই ধস নেমে পথ রুদ্ধ হয়। কোথাও কোথাও সঙ্কীর্ণ রাস্তা ডেকে আনে দুর্ঘটনা। চামোলির স্থানীয় সাংসদ সতপাল মহারাজের কথায়, ’৯৬ সালে কেন্দ্রে রেল প্রতিমন্ত্রী থাকার সময়েই তিনি হৃষীকেশ-কর্ণপ্রয়াগ রেলপথের সমীক্ষা করিয়েছিলেন। তার পর অনুমোদন পেতে লেগে গিয়েছে ১৫ বছর। তবে আজ রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী জানিয়ে দিয়েছেন, পাঁচ বছরের মধ্যে প্রকল্প শেষ করবে রেলমন্ত্রক। |
রেল কর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হৃষীকেশ থেকে কর্ণপ্রয়াগ পর্যন্ত সড়ক পথে দূরত্ব ১৭৬ কিলোমিটার। সময় লাগে প্রায় ৮ ঘন্টা। কিন্তু রেলপথে সেই দূরত্ব কমে হবে ১২৫ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত এই রেল পথ ৫৮ নম্বর জাতীয় সড়কের সমান্তরালে কিছুটা যাবে। তার পর নদী পেরিয়ে শ্রীনগর-রুদ্রপ্রয়াগ ছুঁয়ে কর্ণপ্রয়াগে পৌঁছবে। অনেক জায়গাতেই রেলপথ এলিভেটেড হবে, কোথাও কোথাও সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়েও যাবে পথ। মোট খরচ হবে আনুমানিক ৪২৯৫ কোটি টাকা। এই রেলপথে মোট ১২টি স্টেশন থাকবে। শুধু কেদার-বদরিই নয়, গঙ্গোত্রী, পৌড়ী, কল্পেশ্বর, আউলি, হেমকুণ্ড সাহেব, ভ্যালি অব ফ্লাওয়ার্স, উখিমঠ, চোপতা, তুঙ্গনাথ ও রুদ্রনাথ যাত্রাও সুগম হবে।
তবে সেই সুবিধা পেতে পেতে আরও পাঁচ বছর অন্তত অপেক্ষা তো করতেই হবে। |