দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হলেন দুই তৃণমূল কর্মী। তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর থানার বাহিরী-পাঁচশোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়শিমুলিয়া গ্রামে। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওই গ্রামে আচমকা হামলা চালায়। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাঁদের দাবি, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এ দিন সংঘর্ষ হয়।
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নিশাত পারভেজ বলেন, “এ দিন রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে এলাকায় জড়ো হয়ে অশান্তি পাকানোর অভিযোগে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।”
বুধবার সকালে বড়শিমূলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন পাড়ায় গ্রামবাসীদের জটলা। বীরভূমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারহাত আব্বাসের নেতৃত্বে এসডিপিও (বোলপুর) দেবস্মিতা দাস পুলিশ ও র্যাফ নিয়ে এলাকায় টহল দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে চলছে তল্লাশিও। মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা বীণা বেগম, রীনা বেগমদের অভিযোগ, “বেশ কয়েক দিন ধরে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতী কালো শেখ ও তার দলবল এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জোরজুলুম করছে। কথায় কথায় খুনের হুমকি দিচ্ছিল। বুধবার সকালে হঠাৎ দলবল নিয়ে মসজিদ পাড়া, খাসপাড়া, মাঝপরাড়ায় হামলা চালায়। বোমাবাজি করে। তাদের ছোড়া গুলিতে মাঝপাড়ার বাসিন্দা শেখ আব্দুল হাসিম ও মসজিদ পাড়ার শেখ নওসাদ জখম হন। আরও কয়েক জন বাসিন্দাকে তারা বেধড়ক পেটায়। পুলিশ আসার আগে অবশ্য তারা পালিয়ে যায়।”
|
পুলিশ সূত্রে খবর, বড়শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মারধর, এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে ওই গ্রামের চৌরাস্তার বাসিন্দা রফিকুল ওরফে কালো শেখের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগে সম্প্রতি পুলিশ তাঁকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, শেখ আব্দুলের চোখ ও কানের মাঝামাঝি জায়গায় এবং শেখ নওসাদের ডান চোখের উপরে গুলি লেগেছে। তাঁদের বোলপুর থেকে বর্ধমানে পাঠানো হয়েছে। তবে রাতের দিকে অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেখ আব্দুলকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। আরও কয়েক জন জখম হয়েছিলেন। তাঁদের অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরীর অভিযোগ, “সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতী কালো শেখ, উত্তম দাস তাদের সঙ্গীদের নিয়ে গ্রামবাসী ও তৃণমূল কর্মীদের উপরে আক্রমণ করে। বোমাবাজি করে লুঠপাট চালায়। আমাদের দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আরও তিন জন জখম হয়েছেন।” অন্য দিকে, সিপিএমের বোলপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক উৎপল রুদ্র পাল্টা দাবি করেছেন, “এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এলাকা কার দখলে থাকবে তা নিয়ে এ দিন তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ। আমরা চাই শান্তি ফেরাতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিক।” |