দিনে টিকিট বিক্রি ৪০ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকা। অথচ পরিষেবার বালাই নেই। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। আলো জ্বলে না। তথৈবচ নিরাপত্তা। চালু করার পরে সাত বছর কেটে গেলেও দক্ষিণ দিনাজপুরের মহকুমা শহর গঙ্গারামপুরের রেল স্টেশনের এমনই বেহাল দশা।
পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে স্টেশন থেকে পুনর্ভবা নদীর উপরে রেল সেতু পর্যন্ত প্রায় ৩০০ মিটার কেবল তার চুরি হয়েছে। রাতের ট্রেন ধরতে গিয়ে এখন যাত্রীদের অন্ধাকার স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পড়ে সেখানে দুষ্কৃতীদের আড্ডা জমছে। চুরি যাচ্ছে স্টেশনের সামগ্রী। গঙ্গারামপুর রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক অজয় দাস বলেন, “রেল দফতর রোজগার করবে অথচ পরিষেবার ব্যবস্থা করবে না সেটা হয় না। রেল কর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আন্দোলন শুরু হবে।” |
রেল কর্তারা সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার ভূষণ পটেল বলেন, “সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।” রেল মানচিত্রে ২০০৪ সালে ঠাঁই পায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। বালুরঘাট-একলাখি রেলপথে ওই বছর ট্রেন চালুর পর থেকে গঙ্গারামপুর স্টেশনটিকে পণ্য পরিবহণের উপযুক্ত করে তোলার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ওই দাবি উপেক্ষা করে রেল দফতর বুনিয়াদপুরে যাত্রিশেড, ওয়েটিং রুম, পণ্য পরিবহণের উপযুক্ত ‘সি’ শ্রেণির স্টেশন তৈরি করে। গঙ্গারামপুরকে ‘ডি’ শ্রেণির হল্ট স্টেশনের মর্যাদা দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভৌগলিক অবস্থান-কারণে গঙ্গারামপুরে ব্যবসার বিস্তার ঘটেছে। জেলা সদর বালুরঘাট, মহকুমা সদর বুনিয়াদপুরের মধ্যে অবস্থিত গঙ্গারামপুরকে কেন্দ্র করে তপন, বংশীহারি এবং কুমারগঞ্জ ব্লকের বড় অংশে ব্যবসা চলে। ৩০টি চালকল গড়ে উঠেছে। গঙ্গারামপুরের ব্যবসায়ী আনন্দ সাহা জানান, প্রতিদিন এখান থেকে ৪০০ টন চাল অসম ও ডুয়ার্সে যায়। প্রচুর মাছ যায় শিলিগুড়ি, মালদহে। ৪০টি মাছের আড়ত গড়ে উঠেছে। রেল স্টেশনে পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা থাকলে ভাল হত। রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক বলেন, “স্টেশনে দিনে ৪২ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অথচ পরিষেবা নেই। এ ভাবে চলতে পারে না।” |