সরকারি দফতরগুলি মোটা টাকার বকেয়া সম্পত্তি কর না মেটানোয় নাগরিক পরিষেবার কাজ সুষ্ঠুভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করলেন বালুরঘাট পুর কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, প্রায় ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা সরকারি দফতরগুলির কাছে বকেয়া পড়ে রয়েছে। অথচ আর্থিক সমস্যার কারণে বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা মারার তেল দেওয়া, রাস্তা সংস্কারের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলাশাসক থেকে পুলিশ সুপার, হাসপাতাল থেকে বিডিও অফিস বিভিন্ন সরকারি দফতরে করের ওই টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। ২০০৮ সাল থেকে ওই পুর করের টাকা পড়ে থাকলেও তা আদায় করতে কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নিয়েছে? বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “টাকা চেয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাগাদা দেওয়া হলেও বকেয়া কর মেলেনি। সে কারণে নাগরিক পরিষেবার কাজ করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।” সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুরে জেলাশাসকের দায়িত্বে যোগ দিয়েছেন দুর্গাদাস গোস্বামী। তিনি বলেন, “পুর কর বাকি থাকার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে ওই টাকার জন্য পুরসভার নাগরিক পরিষেবার কাজ ব্যহত হওয়ার কথা নয়।” জেলা পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ জানান, রাজ্যের কাছে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। টাকা এলেই তারা বকেয়া পুরকর মিটিয়ে দেবেন। আরএসপি পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮-২০০৯ আর্থিক বছর থেকে এই আর্থিক বছরে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি দফতরগুলিতে বকেয়া পড়ে রয়েছে ১ কোটি ২৭ লক্ষ ৩ হাজার ৩৩৩ টাকা। তার মধ্যে ১২ টি হোল্ডিং নম্বরে জেলাশাসকের দফতরে প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে জেলা পুলিশ সুপারের দফতরের ৩৪ টি হোল্ডিংয়ের। জেলা হাসপাতালের বকেয়া করের পরিমাণ প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা। জেলা জজের দফতরের প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে। তা ছাড়া ভূমি রাজস্ব দফতর, পিএইচই, বিডিও অফিস-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে বকেয়া পড়ে রয়েছে প্রায় লক্ষাধিক টাকার পুর কর। ভাইস চেয়ারম্যান অমর সরকার বলেন, “নাগরিক পরিষেবাজনিত সমস্যা মেটাতে চেষ্টা চলছে। তবে সরকারি দফতরগুলির কাছ থেকে বকেয়া কর না পাওয়ায় টাকার অভাবে কাজে সমস্যা হচ্ছে।” পুরসভার নাগরিক পরিষেবা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ বিস্তর। তাঁরা জানান, কংক্রিটের স্ল্যাব দিয়ে ঢাকা অধিকাংশ নর্দমায় নিকাশির বেহাল দশা। জল যায় না ওই নর্দমাগুলিতে। বর্ষায় নর্দমার জল উপচে লাগোয়া রাস্তাগুলির বেহল পরিস্থিতি হয়েছে। বেহাল রাস্তাগুলি মেরামত করা হচ্ছে না। নদর্মাগুলি মশার আতুর ঘর হয়ে উঠেছে। শীতের শুরুতে মশার দাপট বাড়ে বলে পুরসভা থেকে এ সময় মশা মারার তেল স্প্রে করা হয়। অথচ এ বার সেই কাজ ঠিক মতো করা হয়নি। শহরের কলেজমোড় থেকে উত্তমাশা, বিশ্বাসপাড়া থেকে যুবসঙ্ঘ, বন্দি এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল পরিস্থিতি। বিভিন্ন এলাকায় গলি রাস্তাগুলিও ভেঙে চুরে গিয়েছে। |