প্রস্তুতি শেষ! আগামী কাল, বৃহস্পতিবার থেকেই রসের লড়াইয়ে মেতে উঠছে রাসমেলা। মেলা চত্বরেই পর পর পসরা সাজিয়ে বসছেন জিলিপি বিক্রেতারা---গোটা কোচবিহারের রকমারি জিলিপি ব্যবসায়ীরা। রাসমেলায় জিলিপি খেয়ে রসনার তৃপ্তি যাঁরা চান ফি বছরের মতো এ বারও তাঁদের নিরাশ হওয়ার তাই কোনও কারণ নেই। রসের স্বাদ দিতে ভেটাগুড়ি থেকে বাবুরহাটের জিলিপি সবই থাকছে। উৎসাহীরা জানেন মেলায় গরমাগরম জিলিপি খাওয়ার মজা। তা খেতে কেউ পাল্লা দেবেন ভেটাগুড়ির জিলিপির দোকানে আবার কেউ মশগুল থাকবেন বাবুরহাটের জিলিপিতে। বাসিন্দাদের উৎসাহে জিলিপি বিক্রেতাদের মুখেও ফি বছর হাসি ফোটায় রাসমেলা। শুধু কী ভেটাগুড়ি বা বাবুরহাটের জিলিপি! মেলায় মিলবে নীলকুঠির জিলিপি, দেওয়ানহাটের জিলিপি, পুণ্ডিবাড়ির জিলিপির মতো হরেকরকমের জিলিপির দোকান। একই জায়গায় সার দিয়ে থাকা ওই জিলিপির দোকানেই ভিড় জমে মেলার দিনগুলিতে। আমজনতা থেকে প্রশাসনিক কর্তা, জনপ্রতিনিধিরাও মুখিয়ে রয়েছেন সেই জিলিপি খেতে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার প্রণব দাসের কথাতেই তা স্পষ্ট। প্রণববাবু বলেন, “রাসমেলায় জিলিপির বিষয়ে শুনেছি। এখানকার জিলিপির গুণগত মান বা স্বাদে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু রয়েছে। সুযোগ পেলে এ বার নিজেও জিলিপি চেখে দেখব। তাতে এখানকার জিলিপির জনপ্রিয়তার কারণ বুঝতে পারব।” জিলিপি নিয়ে উৎসাহী উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ফি বছর মেলায় গিয়ে জিলিপি খাওয়া তাঁর চাই। এ বার মধুমেয় রোগের কারণে চিকিৎসকরা অবশ্য তাঁকে মিষ্টি কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে রবীন্দ্রনাথবাবু কথায়, “রাসমেলায় যাব আর জিলিপি খাব না, তাই হয় নাকি। চিকিৎসকরা যাই বলুন মেলায় গিয়ে সব জিলিপির নমুনাই চেখে দেখব। তা ছাড়া ‘সুগার ফ্রি’ জিলিপিও তো থাকে।” কাল, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা। এমজেএন স্টেডিয়াম লাগোয়া মাঠে মেলা চলবে ১৫ দিন ধরে। রাসমেলায় ওই রসের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। ভেটাগুড়ির জিলিপি ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ নন্দী বলেন, “আমাদের জিলিপি তৈরির ফর্মূলা গোপন ব্যাপার। তবে এ টুকু বলতে পারি এ বার জিলিপির স্বাদে বৈচিত্র থাকবে। রসের স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।” বাবুরহাটের এক ব্যবসায়ী ভবতোষ দেবনাথের কথায়, শারীরিক সমস্যার জন্য তিনি নিজে এ বার মেলায় যেতে পারছেন না। তবে অন্যান্য যাচ্ছেন। বাবুরহাটের জিলিপির টান এড়ানো কঠিন বলেই তাঁর দাবি। |