দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নানা দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়নগুলির আইন অমান্য আন্দোলনের জেরে মঙ্গলবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মালদহ। তবে উত্তরবঙ্গের অন্য ৫ জেলায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবে ওই আন্দোলন হয়েছে। মালদহে আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে জেলাশাসকের কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। তাতে আন্দোলনকারীদের কয়েকজনের মাথা ফেটে গিয়েছে বলে বামেদের দাবি। কয়েকজন পুলিশকর্মীরও আঘাত লেগেছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ওই ঘটনায় ৬ জন মহিলা সহ ৩০ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। অন্য ৫ জেলায় আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হলেও সঙ্গে সঙ্গেই জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। শিলিগুড়িতে গোলমালের আশঙ্কায় কড়া নিরাপত্তার বেড়াজাল তৈরি করে পুলিশ। কমব্যাট ফোর্স, জল কামান থেকে শুরু করে কয়েকশো পুলিশ কর্মীতে ছয়লাপ হয়ে যায় শিলিগুড়ির মহকুমাশাসকের অফিস চত্বর। তিনটি ব্যারিকেড তৈরি করে পুলিশ। তবে বামপন্থীরা একটি ব্যারিকেড ভাঙার পরে আন্দোলনকারীরা এগোনোর চেষ্টা করলে শিলিগুড়ি থানার আইসি সহ সব অফিসাররা তাঁদের বাধা দেন। বয়স্ক বাম নেতাদের বুঝিয়ে তাঁরা দূরে সরিয়ে দেন। |
এক প্রবীণ নেতার বুকে পেস মেকার বসানোর বিষয়টি মাথায় রেখে তাঁকে নিরাপদে নিয়ে যান পুলিশ অফিসাররা। তার পরে কিছুক্ষণ ধস্তাধস্তির পরে আন্দোলনকারীরা গ্রেফতার বরণ করেন। প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম ঘোষ আন্দোলনকারীদের সবাইকে গ্রেফতার করে জামিনে ছেড়ে দেওয়া কথা বলতেই আইন অমান্য কমর্সূচি শেষ করার কথা ঘোষণা করেন বাম নেতারা। এদিন বেলা সাড়ে ১২টার সময় দেওয়া হলেও আদালত চত্বরে আইন অমান্য হয় বেলা দেড়টা নাগাদ। সিপিএম, সিপিআই, আরএসপি শ্রমিক সংগঠনের জেলার নেতারা কর্মসূচিতে অংশ নেন। শহরের বাঘাযতীন পার্কে জমায়েত করেন বাম নেতারা। সেখানে সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, প্রাক্তন সভাধিপতি অনিল সাহা’রা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখলেও আইন অমান্য কর্মসূচিতে তাঁরা অংশ নেন। সিপিএমের সাংসদ সমন পাঠক, সিটুর জেলা সম্পাদক অজিত সরকার, সিপিআই-র জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী এবং আরএসপি জেলা সম্পাদক বিনয় চক্রবর্তী’র নেতৃত্বে শ’পাচেক কর্মী কর্মসূচিতে অংশ নেন। বালুরঘাটেও আইন অমান্য কর্মসূচিকে ঘিরে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এদিন বিকাল ৩টা নাগাদ বিক্ষোভ মিছিল বালুরঘাট শহর পরিক্রমা করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাশাসকের দফতরের সামনে জমায়েত হয়। |
জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক মানিক সান্যাল, সিটু নেতা জিয়াউর আলম, চা শ্রমিক নেতা চিত্ত দে, সিপিএম নেতা সলিল আচার্য, আরএসপি নেতা মনোহর তিরকে, ফব শ্রমিক নেতা তথা রাষ্ট্রীয় চা মজদুর কংগ্রেসের কার্যকরী সম্পাদক প্রবাল রাহা সহ অনান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কোচবিহারেও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শহরের সাঘরদিঘি লাগোয়া জেলাশাসকের দফতরের সামনে প্রথমে বিক্ষোভ, পরে আইন অমান্য হয়। সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তারিণী রায়, প্রাক্তন বিধায়ক দীপক সরকারের নেতৃত্বে শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা কর্মসূচিতে অংশ নেন।
|