জীর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা
শিশুমৃত্যু ঠেকাতে হচ্ছে বিশেষ ইউনিট
বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় সাম্প্রতিক কালে রাজ্য জুড়েই শোরগোল পড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠছে। শুধু কলকাতার হাসপাতাল নয়, মেদিনীপুর মেডিক্যাল বা জেলার অন্য হাসপাতালগুলিতেও মাঝেমধ্যেই শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে চিকিৎসায় গাফিলতির। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী করেন পরিকাঠামোর অভাবকে।
এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের হাসপাতালগুলিতে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে বিশেষ পরিকাঠামো গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল স্বাস্থ্য দফতর। স্থির হয়েছে, জেলার ৩টি হাসপাতালে ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ) এবং ৬ টি হাসপাতালে ‘সিক নিওনেটাল স্টেবিলাইজেশন ইউনিট’ (এসএনএসইউ) গড়ে তোলা হবে। ক্রমে সব হাসপাতালেই শিশুদের জন্য এই বিশেষ ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। পূর্ত দফতরকে যত শীঘ্র সম্ভব কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “হাসপাতালে এই ইউনিট থাকলে গুরুতর অসুস্থ শিশুদেরও অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলিতে ইউনিট গড়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল ও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে কেয়ার ইউনিট গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আর ডেবরা, চন্দ্রকোনা ও সবং গ্রামীণ হাসপাতাল, গোপীবল্লভপুর ২-এর তপসিয়া, নারায়ণগড়ের বেলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্টেবিলাইজেশন ইউনিট গড়ে তোলা হবে। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল-সহ জেলার আরও কয়েকটি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্টেবিলাইজেশন ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঘাটাল হাসপাতালের সুপার অনুরাধা দেব বলেন, “কেয়ার ইউনিট গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। এখানে ৮ জন শিশুর থাকার ব্যবস্থা থাকবে। কম ওজনের শিশুকে বাঁচানো অনেক সময়ই অসম্ভব হয়ে পড়ে। এই ইউনিট গড়ে উঠলে কিছু সুবিধা হবে।” একই বক্তব্য খড়্গপুর হাসাপাতালের সুপার দেবাশিস পালের। তাঁর কথায়, “প্রস্তাবিত ইউনিট গড়ে উঠলে অসুস্থ শিশুদের অন্তত পর্যবেক্ষণে রাখা যাবে।”
কেয়ার ইউনিটে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম থাকে। এখানে রেখেই নবজাতকদের চিকিৎসা করা হয়। ২৪ ঘন্টাই চিকিৎসক থাকেন। স্টেবিলাইজেশন ইউনিটে অবশ্য এত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম থাকে না। তবে, এখানে শিশুদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে এমন জায়গায় ‘রেফার’ করা হয়, যেখানে নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটের সুবিধা রয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এক-একটি কেয়ার ইউনিট গড়তে খরচ পড়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা। স্টেবিলাইজেশন ইউনিটের ক্ষেত্রে খরচ ৭-৮ লাখ। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ধারণা, প্রস্তাবিত ইউনিটগুলি গড়ে উঠলে এ জেলায় শিশু মৃত্যুর হার কমবে। সামান্য কারণে আর শিশুদের অন্য হাসপাতালে ‘রেফার’ করতে হবে না। এক শিশু বিশেষজ্ঞের কথায়, “পরিকাঠামো না থাকলে আমাদের কিছু করার থাকে না। সব রকম চেষ্টা করেও শিশুকে বাঁচানো না গেলে আমাদেরও খারাপ লাগে। নবজাতকের ওজন যদি ৭০০-৮০০ গ্রাম হয়, সে ক্ষেত্রে তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.