প্রতারণা মামলায় ধৃত রাজীব ভদ্র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া সড়কের ধারে বেশ কিছু জমি কিনেছে বলে সন্দেহ পুলিশের। এই ব্যাপারে কিছু নথিপত্র হাতে আসায় পুলিশের ওই সন্দেহ জোরদার হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের দাবি, দিল্লিতে একটি উপনগরীতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার জন্য বুকিংও করেছেন রাজীব। মুম্বইয়ের প্রতারণা সংস্থার কাছ থেকে আয় করা কমিশনের টাকা থেকেই রাজীব-সহ অন্যান্য এজেন্টরা উপনগরীতে বুকিং কিংবা অন্যান্য বেআইনি সম্পত্তি করেছিল বলেও সন্দেহ করছে পুলিশ। রাজীবকে জেরা করে ওই তথ্য উদ্ধারের পাশাপাশি ওই প্রতারণা সংস্থার অন্যান্য এজেন্টদের সম্পর্কেও আরও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা করছে। মঙ্গলবার রাজীবকে শিলিগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির করে ফের ৩ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন জানানো হয়। বিচারক সন্তোষ পাঠক ওই আবেদন মঞ্জুর করেন। মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থার এজেন্ট তথা বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী রণবীর দাস এবং দেবব্রত পালকেও নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আবেদন জানায়। মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর রামশাজীবন সাহেবরাম চৌধুরীকে অন্য একটি মামলায় গ্রেফতারের আবেদন জানান। আজ, বুধবার বিচারক এই ব্যাপারে সরকার পক্ষ এবং অভিযুক্তদের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনবেন বলে সরকারি আইনজীবী রণজিৎ সাহা জানান। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, জেরার স্বার্থেই এদিন রাজীবকে ফের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়। রাজীবের কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য মিলবে বলে আমরা আশা করছি।” এদিকে, মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থার পাশাপাশি পুলিশ বেঙ্গালুরুর একটি প্রতারণা সংস্থার বিরুদ্ধেও তদন্তে নেমেছে। ওই সংস্থার শিলিগুড়ির দুই এজেন্টকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এদিন তাঁদেরও ফের জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পুলিশ আবেদন জানায়। পুলিশের দাবি, মুম্বইয়ের ওই প্রতারণা সংস্থার বিরুদ্ধে দায়ের করার মামলায় ধৃতদের জেরা করে একের পর এক তথ্য মিলছে। এজেন্টরা কী ভাবে নিরীহ লোকেদের কয়েক মাসে টাকা দ্বিগুণ করার লোভ দেখিয়ে বহু লক্ষ টাকা কমিশন আদায় করেছেন তার অনেকটাই স্পষ্ট হচ্ছে। ওই কমিশনের টাকার একাংশ এজেন্ট ওই প্রতারণা সংস্থায় ফের লগ্নি করলেও বেশির ভাগ টাকা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ির পিছনে খরচ করেছেন। রণবীর দায়ের কাছ থেকে একটি বিলাসবহুল গাড়ি এবং দামী মোটর বাইক আটক করা হয়েছে। অন্য এক এজেন্টকে গাড়ি-সহ ধরার চেষ্টা হলে তিনি গা ঢাকা দেন। অন্য গাড়িগুলির হদিশ চলছে। গ্রেফতারি এড়াতে অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন। লুকিয়ে রাখা হয়েছে গাড়িও। অভিযুক্তদের সন্ধান পেতে পুলিশ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপরেও নজরদারি চালাচ্ছে। শিলিগুড়ির এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “এক এজেন্ট একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ মিলেছে। তার সন্ধানও চলছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |