একশো দিনের কাজের প্রকল্পের এক সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে থানায় নালিশ জানালেন বিডিও। অভিযুক্ত পলাতক বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
ঘটনাটি বসিরহাট ১ ব্লকের মাটনিয়া গ্রামের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় গোঠরা পঞ্চায়েত এলাকায় হাজার তিনেক জবকার্ড আছে। মাটনিয়া গ্রামের বহু মানুষের অভিযোগ, অনেককে ভুল বুঝিয়ে কাজ না দিয়েও জবকার্ড, পোস্ট অফিসের পাসবই নিয়ে নিয়েছে একশো দিনের কাজের সুপারভাইজার রবিউল ইসলাম ঢালি। সেই পাসবই থেকে অন্যায় ভাবে টাকা তোলা হয়েছে বলেও সম্প্রতি চোখে পড়ে মাটনিয়ার বাসিন্দা সিরাজুল মণ্ডল, আবদুল লতিব মণ্ডল, আবু ছালাম মণ্ডল, আবদুল কাদেল মণ্ডল, ছালেক মণ্ডলদের। ঘটনার কথা তাঁরা জানান সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর বসিরহাট শাখায়। সংগঠনের পক্ষ থেকেও দরিদ্র খেতমজুরদের নিয়ে বসিরহাট ১ বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় অভিযোগ ওঠে রবিউলের বিরুদ্ধেই।
সিরাজুল, লতিবরা বলেন, “একশো দিনের কাজের পর পাসবই, জবকার্ড নিয়ে নেন রবিউল। ফেরত চাইলেও তা দেওয়া হয়নি।” অভিযোগকারীদের বক্তব্য, বহু বার জরুরি নথিপত্র ফেরত চেয়েও কাজ না হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। তাতে কাজ হয়। পাসবই ফেরত মেলে। কিন্তু দেখা যায়, কাজের পাওনা টাকার থেকে অনেক বেশি টাকা তোলা হয়েছে ওই পাসবই ব্যবহার করে। সই এবং টিপছাপ নকল করা হয়েছে।
লিবারেশনের জেলা কমিটির সদস্য দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “কেবল ওই পাঁচ খেতমজুরই নন, গ্রামে ঘুরে আমরা দেখেছি রবিউল ঢালির নেতৃত্বে একটি বড় চক্র আছে। ইতিমধ্যে শতাধিক গরিব মানুষের কাছ থেকে জবকার্ড ও পোস্ট অফিসের পাসবই হাতিয়ে তারা অন্যায় ভাবে টাকা তুলেছে।” তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। দেবব্রতবাবুর আরও অভিযোগ, সরকারি কোনও কোনও কর্মীও এই কাজে জড়িত থাকতে পারেন। তা-ও তদন্ত করে দেখা হোক।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তদন্তে নামে ব্লক প্রশাসন। অভিযোগের পক্ষে প্রমাণও মেলে বলে জানায় প্রশাসন। তারপরেই রবিউলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন বিডিও ভাস্কর পাল। তিনি বলেন, “কেউ তিন-চার মাস কাজ করেনি। অথচ দেখা যাচ্ছে, তাঁর অ্যাকাউন্টে মজুরি-বাবদ টাকা ঢোকানো হয়েছে। পরে তা তুলেও নেওয়া হয়েছে। নিরক্ষর কোনও ব্যক্তি কী ভাবে সই করে টাকা তুললেন, তা জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট পোস্টমাস্টার জানিয়েছেন, সুপারভাইজার রবিউল যাঁকে যাঁকে সনাক্ত করেছেন, তাঁদের হাতে টাকা দেওয়া হয়েছে।” বিডিও জানান, গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে স্বচ্ছ্বতার অভাব লক্ষ্য করেই দিন কয়েক আগে ওই সুপারভাইজারের নামে পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়। |