নিজস্ব সংবাদদাতা • বেলডাঙা |
উৎসবের মরশুমে আকাশ ছুঁয়েছে সব্জির দাম। পুজোর দিনগুলোতে বাজার করতে গিয়ে হিমসিম খেয়েছেন সকলেই। উৎসব শেষ হলেও এখনও বাজার সেই অগ্নিমূল্যই। তবে শীত পড়তে না পড়তেই বাজার ছেয়েছে ফুলকপিতে। চাষিরা জানালেন, অন্য সব্জির তুলনায় মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে থাকায় এই মরশুমে সবেথেকে বেশি বিকোচ্ছে ফুলকপিই।
বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি আর অক্টোবরের শেষে ভাল আবহাওয়ায় ফুলকপির ফলন ভাল হয়েছে বলে জানালেন চাষিরা। সব্জি বাজার এখনও আগুন। তবে প্রতি দিনই বাজারে ফুলকপির চাহিদা থাকছে।
এখন বাজারে পটল মিলছে ৩০ টাকা প্রতি কেজি দরে। ঢেঁড়স ৬০ টাকা প্রতি কেজি, বেগুন ৩০ টাকা কেজি, টমেটো পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। তার তুলনায় নিতান্তই সস্তায় ভাল মানের ফুলকপি মিলছে। স্থানীয় বাজারগুলোয় বড় ফুলকপি মিলছে ১২ টাকা থেকে ১৫ টাকা দরে। আর ছোট মাপের কপির দাম বড় জোর ৬টাকা থেকে ৮ টাকা।
বেলডাঙার একটি স্কুলের শিক্ষিকা শাহানাজ পরভিন বললেন, “পটল, বেগুন, আলু, টমেটোর মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সব্জির যা দাম! এর থেকে অনেক কমে, প্রায় অর্ধেক দামে ভআল মানের ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই এত সব্জি না কিনে ফুলকপি দিয়েই রান্না করছি। আর শীত পড়ে যাওয়ায় কপিতে সেভাবে রোগ পোকাও নেই।”
বেলডাঙা-১ ব্লক কৃষি উন্নয়ণ আধিকারিক শুভঙ্কর বসাক বলেন, “পর্যাপ্ত বৃষ্টিতে কৃষকদের সমস্যা হয়নি। বাড়তি জলের দরকার হয়নি। এ বার আবহাওয়া ভাল থাকায় কীটনাশকের দরকারও পড়েনি সেভাবে। এবার ফুলকপির ফলন উল্লেখযোগ্য ভাবে ভাল হয়েছে।”
কৃষি দফতরের হিসাব অনুসারে প্রতি বিঘা জমিতে ৪ হাজার পর্যন্ত ফুলকপি চাষ করা যায়। সেখান থেকে মোটের উপরে বিঘা প্রতি জমিতে প্রতি মরশুমে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন চাষিরা। বেলডাঙা-১ ব্লকের মহুলা, গোপীনাথপুর, পুলিন্দা, দেবপুর, চৈতন্যপুর, মাড্ডা, মহেশপুর, রামেশ্বরপুর, দেবকুণ্ড এলাকায় এ বার ফুলকপির ফলন ভাল হয়েছে।
গোপীনাথপুরের চাষি সনৎ মণ্ডল বলেন, “আমার ২ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। টানা উৎসবের মরশুমে ফুলকপির ভাল চাহিদা ছিল। এখনও প্রতি দিনই বাজারে ফুলকপির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।” সেথানীয় চাষি আবদুল গনি বললেন, “প্রথম থেকেই আকাশ পরিষ্কার থাকায় পোকার সমস্যা হয়নি এ বার। ফলে কীটনাশকের খরচও হয়নি। এর জন্যই মানুষ কম দামে ভাল মানের কপি পাচ্ছেন।” বেলডাঙার বাসিন্দা ও কপি ব্যবসায়ী অনুপ মণ্ডল বলেন, “পুজোর মরশুমে একমাত্র ফুলকপিই মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে ছিল। এখনও কপির খুব চাহিদা রয়েছে। পোকার আক্রমণ কম বলেই টাটকা কপি কম দামে পাচ্ছেন ক্রেতারা। |