ডোমজুড়ে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শীঘ্রই শেষ হয়ে যাবে। এরপরেই এটি চালুও হয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন হাওড়া জেলা পরিষদের কর্তারা। ১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি করছে জেলা পরিষদই।
ডোমজুড় থেকে ডোমজুড়-হাওড়া রুটে বাস এবং মিনিবাস চলাচল করে। ডোমজুড় থেকে কলকাতায় চলাচল করে সিটিসি বাস। কিন্তু ডোমজুড়ে কোনও বাসস্ট্যান্ড নেই। থানার সামনে হাওড়া-আমতা রাস্তার উপরেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস ও মিনি বাসগুলি। কিছুটা দূরে এই রাস্তার উপরেই দাঁড়ায় সিটিসি বাস। অটো রিকশা, ট্রেকার এবং ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তার উপরে।
সব মিলিয়ে ডোমজুড়ে বেশ যানজট হয়। স্কুল খোলার সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সাইকেলের ভিড়ে রাস্তা কার্যত অচল হয়ে পড়ে। একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয় বিকেলে স্কুলগুলির ছুটি হওয়ার পরে। সন্ধ্যার সময়ও এই রাস্তায় বেশ যানজট হয়।
যানজটের ফলে প্রায় নিয়মিতই এই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বছর দুই আগে ডোমজুড়ে বাসের নীচে চাপা পড়ে এক ছাত্রের মৃত্যর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। এই সব কারণে স্থানীয় বাসিন্দা-সহ বিভিন্ন মহল থেকে ডোমজুড়ে বাসস্ট্যান্ড তৈরির দাবি ওঠে। শেষ পর্যন্ত জেলা পরিষদ ডোমজুড়ে থানার পাশে বাসস্ট্যান্ড তৈরির উদ্যোগ নেয়।
বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য মোট ১৯ হাজার বর্গফুট জমি কেনা হয়েছে। এর জন্য খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এই টাকা অবশ্য জেলা পরিষদ দিয়েছে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে। এখানেই বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ শুরু করে জেলা পরিষদ।
দু’টি পর্যায়ে বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি হবে। আপাতত আট হাজার বর্গফুট জমির উপরে প্রথম পর্যায়ের কাজ হচ্ছে। কাজ শুরু হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে। নীচের তলায় হচ্ছে বাসস্ট্যান্ড। উপরের তলায় হবে বাণিজ্যিক চত্বর। নীচের তলায় বাসস্ট্যন্ডের সঙ্গেই অবশ্য কিছু দোকান ঘরও করা হচ্ছে।
এই সব দোকানঘর লিজ দিয়ে আয়ের সংস্থান করবে জেলা পরিষদ। দোতলায় বাণিজ্যিক চত্বরটিও ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে লিজ দেওয়া হবে বলে জেলা পরিষদ সূত্রের খবর। উদ্দেশ্য, আয় বাড়ানো। প্রথম পর্যায়ে এ জন্য খরচ হচ্ছে ১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। এই টাকা এসেছে পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ‘গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল’ (আরআইডিএফ) থেকে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে শুরু হবে বাকি ১১ হাজার বর্গফুট জমিতে দ্বিতীয় পর্যায়ের বাসস্ট্যান্ড তৈরির কাজ। ট্যাক্সি, অটো রিকশা এবং ট্রেকার দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।
ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপি ঠাকুর চক্রবর্তী বলেন, “বাসস্ট্যান্ডের দাবিতে আমরা বহু বছর ধরে আন্দোলন করেছি। এই দাবিতে অনশনও করা হয়েছে। যাইহোক, বাসস্ট্যান্ড তৈরি হচ্ছে ভাল কথা। কিন্তু এর কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এই দাবিতে আমরা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখাও করেছি।”
জেলা পরিষদের পূর্ত সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ আনন্দ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগামী জানুয়ারি মাসেই বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।” তাঁর দাবি, প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে গেলেই ডোমজুড়ে যানজট ও দুর্ঘটনা অনেকটাই কমে যাবে। |