জামশেদপুরের শরিকি বদলা নিতেই কী বিজেপি মান্ডু বিধানসভা উপনির্বাচনের ময়দানে হাজির? প্রকাশ্যে বিজেপি নেতারা সরাসরি কোনও কথা বলতে রাজি না হলেও একান্তে কিন্তু অনেকেই এনডিএ-র শরিকি লড়াইয়ের ফলাফলটাকে ১-১ করতে বিশেষ আগ্রহী। আর জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিকের এ হেন আচরণে কার্যত ফুঁসছে গুরুজির দল, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)।
গণ্ডগোলের শুরু হাজারিবাগ জেলার মান্ডু বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনকে ঘিরে। আসনটি ছিল জেএমএমেরই দখলে। গত সেপ্টেম্বর মাসে জেএমএম বিধায়ক, টেকলাল মাহাতর মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়। উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে, ৩০ নভেম্বর। আর এই দিন ঘোষণা হতেই এনডিএ-র শরিকি জটিলতার শুরু। উপনির্বাচনের ঘণ্টা বাজতেই মান্ডু আসনের দাবিতে সরব হয় এলাকার বিজেপি কর্মীরা। দলীয় কর্মীদের দাবির সমর্থনে এগিয়ে আসেন বিজেপির রাজ্য কমিটির একাংশ। অন্য দিকে মান্ডু আসনের দাবিতে অনড় জেএমএম নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, আসনটি তাদের ছিল। শরিকি সুসম্পর্ক রক্ষায় তাদেরই পাওয়া উচিত। ইতিমধ্যে মান্ডু আসনের জন্য দলীয় প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে দিয়েছেন জেএমএম নেতৃত্ব।
বিজেপি-র এক নেতার কথায়, গণ্ডগোলের শুরু তো সেই জামশেদপুর লোকসভা উপনির্বাচনের সময় থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা বিধানসভায় নির্বাচিত হয়ে জামশেদপুর আসন থেকে ইস্তফা দেন। স্বাভাবিক নিয়মেই আসনটি আমাদেরই প্রাপ্য ছিল। জেএমএম জেদ করে ওই আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়ে ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চার প্রার্থী অজয় কুমারের জয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়। আসনটি বিজেপি-র হাতছাড়া হয়। জেএমএম তখন বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই-এর কথা বলেছিল। এখন মান্ডুতে একই কথা বিজেপি-ও বলছে। শুনতে নারাজ শিবু বা হেমন্ত সোরেনরা।
শরিকি ঐক্য অক্ষুণ্ণ রাখতে আজ জোট সরকারের প্রধান দুই শরিক, বিজেপি এবং জেএমএম দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসে। কিন্তু সেখানে কোনও মীমাংসা সূত্র বেরিয়ে আসেনি। মান্ডু আসনের দাবি ছাড়তে নারাজ ওই দুই শরিকই। আগামী ১২ নভেম্বর ওই আসনে মনোনয়নপত্র পেশ করার শেষ দিন।
আজকের বৈঠক শেষে, জেএমএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “মান্ডু কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী জয়প্রকাশভাই পটেলের নাম আগেই ঘোষণা করে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে শরিক দলের নেতৃত্বের কাছে ওই আসনে প্রার্থী না-দেওয়ার আবেদন করেছি। এ ছাড়া আমাদের দলের কাছে অন্য বিকল্প নেই।” বৈঠক যে ফলপ্রসূ হয়নি, তা স্বীকার করছেন বিজেপি নেতৃত্বও। বৈঠক নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য না-করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীনেশানন্দ গোস্বামী বলেন, “বলার মতো উল্লেখযোগ্য কিছু হয়নি। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত রূপ পায়নি।” বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শিবলাল ঘোষ বলেন, ‘‘আজকের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রার্থী নিয়ে শরিকি ঐকমত্য হয়নি। দলের তরফে মান্ডু আসনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডার হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি থেকে ফিরে এসে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।” |