খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার জকপুরে পর্যটকদের জন্য অনুসন্ধান কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। জেলায় আসা পর্যটকদের সুবিধার কথা ভেবেই এই ভাবনা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রামকে বাদ রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে ঘিরে একটি ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি খসড়া পরিকল্পনাও তৈরি হয়েছে। ওয়েবকন (ওয়েস্ট বেঙ্গল কনসালটেন্সি অর্গানাইজেশন) এই পরিকল্পনা তৈরি করেছে। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও, বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক হবে। ওই বৈঠকেই প্রকল্পের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “খসড়া প্রকল্প জমা পড়েছে। খুব শীঘ্রই এই নিয়ে বৈঠক হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামে ছোট ছোট পাহাড়, ঝর্না, গভীর জঙ্গল, প্রাচীন মন্দির রয়েছে। প্রাকৃতিক সেই সৌন্দর্যের টানে কলকাতা ও তার আশপাশ থেকে বহু মানুষ আগে ঝাড়গ্রামে আসতেন। তবে, ক’বছর হল পরিস্থিতি পাল্টেছে। সন্ত্রাসের জেরে পর্যটকদের যাতায়াত কমেছে। এখন শীত পড়লেও তেমন ভিড় হয় না ঝাড়গ্রামে। এ দিকে ঝাড়গ্রামের জন্যই জেলার অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলি এত দিন সে ভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। যদিও জেলার অন্যত্র বেশ কয়েকটি ইকো-ট্যুরিজম পার্ক, প্রাচীন মন্দির রয়েছে। তাই ঝাড়গ্রাম বাদে জেলার অন্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে একটি ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই রাজ্য পর্যটন দফতর প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রস্তাবিত সার্কিটের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে। যেমন, মেদিনীপুর শহর ঘেঁষা গোপগড়, রানি শিরোমণি কর্ণগড়, মন্দিরময় পাথরা, ক্ষুদিরামের জন্মস্থান মোহবনি, বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ, পরিমল কানন, গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দির, গনগনি প্রভৃতি।
খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার জকপুরে মনসা মন্দিরে প্রতি মঙ্গল ও শনিবার প্রচুর ভক্ত আসেন। পর্যটকদের ভিড়ও লেগেই থাকে। খড়্গপুরের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে ৬ ও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে, যোগাযোগ ব্যবস্থারও অসুবিধা নেই। সব দিক খতিয়ে দেখেই এখানে অনুসন্ধান কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টারের পাশাপাশি পর্যটকদের থাকার জন্য এখানে ভবন নির্মাণেরও পরিকল্পনা রয়েছে। চালু থাকবে বাস। প্রশাসনের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার মানুষ। মন্দির কমিটির পক্ষে শ্যামল বেরা বলেন, “ভাল উদ্যোগ। আমরা সমস্ত রকমের সহযোগিতা করব।” |