প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী
স্থিরচিত্রকার সত্যজিৎ
রুণ সত্যজিৎ আর সুপ্রভা রায়ের একসঙ্গে একটা ছবি আছে সত্যজিৎ রায়ের যখন ছোট ছিলাম-এ (আনন্দ), ছবিটার তলায় তিনি লিখেছেন: ‘মা আর আমি। ক্যামেরার শাটারের সঙ্গে সুতো বেঁধে আমিই টান দিয়ে তুলেছিলাম ছবিটা।’ স্টিল ফোটোগ্রাফি বা সিনেমা নিয়ে তাঁর আবাল্য কৌতূহল ও উৎসাহের নানা ইশারা যদিও ছড়িয়ে রয়েছে বইটিতে, কিন্তু পরিণত বয়সে সিনেমার বাইরে তাঁর স্টিল ফোটোগ্রাফি করার অভ্যেসের কথা তত পাওয়া যায় না। অথচ প্রচুর না হলেও বেশ কিছু ছবি তুলেছেন সত্যজিৎ, আর সেগুলো দেখার পর কেউ তাঁকে চলচ্চিত্রকারের পাশাপাশি অনায়াসেই বলতে পারে স্থিরচিত্রকার। “বাবার ছবি তোলা শুরু মোটামুটি ‘পথের পাঁচালী’র পর, যখন প্রায়ই তিনি কলকাতা কিংবা দেশের বাইরে যেতে শুরু করেন ওই ছবি করার সূত্রে, পঞ্চাশের দশকের দ্বিতীয় পর্ব থেকে। তখন কিন্তু বাবার নিজের ক্যামেরা ছিল না, বংশীকাকার (চন্দ্রগুপ্ত) একটা লাইকা রেঞ্জ ফাইন্ডার ক্যামেরা ছিল, সেটা নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন, সেটাতেই ছবি তুলতেন। এক বার জাপানে গেলেন, সেখান থেকে একটা পেনট্যাক্স ক্যামেরা কিনে আনলেন, তার পর তাতেই ছবি তুলতেন।’ এ সবের সঙ্গেই সন্দীপ রায় জানালেন, শুটিংয়ের আগে লোকেশন দেখতে গিয়েই মূলত স্টিল তুলতেন সত্যজিৎ, ‘তবে বিদেশ বা আউটডোর যেখানেই হোক, ইন্টারেস্টিং মুখ-চেহারা-জায়গা পেলেই সেকেন্ডের ভগ্নাংশে ক্যামেরা চোখে লাগিয়ে শাটার টিপে দিতেন।
মানবিক মুহূর্তটুকু ধরে রাখতে চাইতেন সাদাকালো-য়।’ কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সত্যজিতের এ-সমস্ত স্থিরচিত্রের প্রদর্শনী, উদ্বোধন ১১ নভেম্বর বিকেলে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায়, চলবে ১২-১৭ নভেম্বর প্রতিদিন ২-৮টা, আয়োজনে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের প্রদর্শনী শাখা। ‘এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী, বাবার এ সব ছবি কেউ দেখেনি, জানেও না।’ মন্তব্য সন্দীপের, তাঁর তোলা ছবিতেই ক্যামেরা-চোখে সত্যজিৎ। সত্যজিতের তোলা স্থিরচিত্র সঙ্গে, বাঁ দিকে: ‘সিকিম’-এর শুটিংয়ে রুমটেক মনাস্টারি-র সামনে, ১৯৭০। ডানদিকে: রোম-এ উত্তমকুমার, বার্লিন উৎসবে ‘নায়ক’ দেখানোর পর, ১৯৬৬।

শিল্পের দর্পণে
খুব বাল্যকাল থেকেই দৃশ্য-শিল্পে তাঁর অভিযান শুরু। অতঃপর, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য, পরবর্তী কালে সেই পদবির ভারমুক্ত হয়ে স্ব-নামেই সুখ্যাত শুভাপ্রসন্ন ক্রমে শিল্পায়নে কাটিয়ে দিলেন দীর্ঘ কয়েকটি দশক। তারই ফসল থেকে নির্বাচিত কিছু কাজ নিয়ে কাল, মঙ্গলবার ইমামি চিজেল আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে তাঁর বিপুল একক প্রদর্শনী, শুভাপ্রসন্ন, রিসেন্ট অ্যান্ড রেট্রসপেক্টিভ। উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পানুরাগীরা জানেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ‘সিরিজ’ এঁকেছেন শুভাপ্রসন্ন, তা সে কলকাতাই হোক, বা বিভিন্ন ‘আইকন’। সেই সব ধারাবাহিক কর্মকৃতির পরিচয়ে সমৃদ্ধ এই প্রদর্শনী। প্রতিটি ধারারই কিছু কিছু কাজ থেকে আঁচ করা যাবে, কোথায় নিহিত এই শিল্পীর অভিজ্ঞান। আগে দেখা কিছু কাজ তো থাকছেই, সঙ্গে কিছু অদেখা সম্ভার । পেন্টিং, ভাস্কর্য, গ্রাফিক্স, রেখাচিত্র সব মিলিয়ে একশো পঁয়তাল্লিশটি কাজ। শিল্পের দর্পণে এক শিল্পী। শুভাপ্রসন্ন।

রামেশ্বরের ছবি
জন্ম ১৯৪১, দিল্লিতে। দিল্লি কলেজ অব আর্ট-এই শিক্ষা, এবং তার পর তাঁর শিল্পকৃতি যে বিচিত্র দিকে গড়াল, তার পরিচয় এ দেশের শিল্পরসিকদের অজানা নয়। সুতরাং, রামেশ্বর ব্রুটা যে ছবি আঁকার পাশাপাশি ছবি তোলেন বা ছবি করেনও, সেই তথ্যটি সুবিদিত। অথচ, নগর কলকাতায় তাঁর তোলা ছবি দেখার সুযোগ বিশেষ হয় না। সেই আক্ষেপ দূর হবে অচিরেই, কারণ আজ থেকে আকৃতি আর্ট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে রামেশ্বর ব্রুটার সাম্প্রতিক আলোকচিত্রের প্রদর্শনী, ‘দিস এন্ড টু দ্য আদার’। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রবিবার বাদে রোজই, ১২-৭টা।

বাংলা বই
‘তাঁর পাণ্ডুলিপিতে কাটাকুটির জাফরির ফাঁক দিয়ে কবিতার অক্ষর জেগে থাকে।’ এ-বাক্যটির আগেই ‘গ্রন্থ, পাঠ, শিল্পকর্ম: রবীন্দ্রনাথ ও রচনার দৃশ্যপট’ নিবন্ধে লিখছেন স্বপন চক্রবর্তী: ‘রবীন্দ্রনাথের টেক্সটের আত্ম-রূপান্তরের বাসনা জার্মানরা যাকে anders-streben বলেন এমন এক শিল্প-প্রকল্পের নিরিখেই বোঝা সম্ভব।’ বিশিষ্ট জনের লেখা এমনই নানা রচনায় ঋদ্ধ নব পর্যায়ের বাংলা বই-এর প্রথম সংখ্যাটি, ‘বিশেষ রবীন্দ্রসংখ্যা’ও এটি। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি-র এই মাসিক আলোচনাপত্রটির নতুন আরম্ভের সম্পাদকীয়তে জানানো হয়েছে যে: শুধু গ্রন্থ সমালোচনা বা বাংলা-প্রকাশনার খবরাখবরেই থেমে থাকবে না মাসিকপত্রটি, ‘মুদ্রণচর্চা থেকে বই বাঁধাই বই-এর প্রযুক্তি ও কারিগরির দিকটাও আমাদের ভাবনার মধ্যে রাখতে চেয়েছি।’

আরশিনগর
পেন্সিলের মতো কাটা ফুরিয়ে যাওয়া ডট পেনের রিফিল, এক দোয়াত কালি আর জল এই সামান্য উপকরণেই ছবি আঁকতে অভ্যস্ত প্রবাল সি বড়াল। এমত সম্বল নিয়েই ২০০৭-এ তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন ইউরোপের বিভিন্ন শহরে। শেষ হয়েছে প্রায় দশটি স্কেচবই-এর পাতা। তা থেকে বাছাই করা কিছু ছবি নিয়ে সম্প্রতি মনফকিরা থেকে প্রকাশ পেয়েছে প্রবালের বই স্কেচেস ফ্রম ইউরোপ/ অ্যান আর্টিস্টস ট্রাভেলগ শীর্ষকে। আর এ বার ওঁর একক প্রদর্শনী আকাদেমিতে, থাকছে গোটা পঁচিশ শিল্পকর্ম। প্রায় অগোচরেই ইতিমধ্যে প্রয়াত হয়েছেন দু’জন বিশিষ্ট ভাস্কর, দেবব্রত চক্রবর্তী এবং মধুসূদন চৌধুরি। প্রবালবাবু কিন্তু মনে রেখেছেন, ‘আরশিনগর’ শীর্ষক তাঁর প্রদর্শনী উৎসর্গীকৃত এঁদের উদ্দেশে। শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এঁদেরই স্মৃতিচারণ করবেন শিল্পী, কলা সমালোচক-সহ গুণমুগ্ধরা। প্রদর্শনী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত, ৩-৮টা।

বাটিক নিয়ে
জাভা ভ্রমণকালে রবীন্দ্রনাথ আকৃষ্ট হয়েছিলেন সেখানকার বাটিক শিল্পের প্রতি। অতঃপর শিল্পী সুরেন করকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এমত শিল্পটির প্রকরণ-কৌশল আয়ত্ত করে শান্তিনিকেতনে তার চর্চা শুরু করতে। গুরুদেবের সেই ইচ্ছেতেই আজ আশ্রমের সঙ্গে বাটিকের আত্মিক যোগ। এই উৎস স্মরণে রেখে বাটিক-কেন্দ্রিক নানা আয়োজন এ বার এ শহরে। ‘সূত্র’ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি শুরু হচ্ছে আগামী শুক্রবার রবীন্দ্রনাথ টেগোর সেন্টারে। বাটিক শিল্প, তার নান্দনিকতা ও বিশ্বায়ন-- এমত নানা বিষয় থাকছে এই আয়োজনে। লন্ডনের ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজিয়ামের বিশেষজ্ঞরাও থাকছেন, শুরুতেই এঁরা বলবেন রবীন্দ্রনাথের ভ্রমণ এবং বাটিক প্রসঙ্গ নিয়ে। দ্বিতীয় পর্বে তন্তুজাত দ্রব্য সংরক্ষণ নিয়ে বলবেন লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত সংরক্ষণবিদরা। ভারতীয় জাদুঘরে আলোচনা হবে ১২ তারিখে। সংরক্ষণ কর্মশালা ১৩-১৭, শুধু সংগ্রহশালা কর্মীদের জন্য। ব্যক্তিগত ও অন্যান্য সংগ্রহ থেকে বেছে নেওয়া, শান্তিনিকেতন, ইন্দোনেশিয়া এবং অন্য স্থানের বাটিক শিল্পের প্রদর্শনী চলবে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত, আই সি সি আর-এ। সংস্কৃতি মন্ত্রক ও ভারতীয় জাদুঘরের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানে থাকছে ক্রেতা-বিক্রেতা আলোচনা। দেখা যাবে কাজে মগ্ন বাটিক শিল্পীদেরও।

বটুকদা
‘নবজীবনের গান’। তাঁর সৃষ্টির নামটিই যেন তাঁর সৃজনজীবনের সামগ্রিক পরিচয়। তিনি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র (১৯১১-১৯৭৭), ঘনিষ্ঠ মহলে ‘বটুকদা’। বিয়াল্লিশের উত্তাল সময়ে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন, যোগ দেন ফ্যাসিবিরোধী লেখক-শিল্পী সঙ্ঘে। পঞ্চাশের মাঝামাঝি সপরিবার দিল্লি চলে যান। সেখানে যুক্ত হন সঙ্গীত-নাটক অ্যাকাডেমি এবং শ্রীরাম ভারতীয় কলাকেন্দ্রের সঙ্গে। সত্তরের দশকে এ শহরে ফেরা। গণনাট্যের গান, কবিতা তো বটেই, আবোল তাবোল, লাল কালো প্রভৃতিতে সুর সংযোজনার জন্যও স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। এ বছর তাঁর জন্মশতবর্ষ। সেই উপলক্ষে ১৩ নভেম্বর তাঁকে নিয়ে সভা, পাটুলির সত্যজিৎ রায় পার্কে। সূচনা করবেন অশোক মিত্র। বলবেন জিষ্ণু দে, সুভাষ চৌধুরী, অরুণ সেন, অতনু চক্রবর্তী। গান-কবিতায় প্রতুল মুখোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, পঙ্কজ সাহা প্রমুখ। এ দিকে বইমেলায় সপ্তর্ষি প্রকাশ করতে চলেছে জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র রচনাসমগ্র।

দু দণ্ড ফোয়ারামাত্র
‘মেঝেতে বসা দুই নির্বাক শ্রোতা, বাইরে গ্রীষ্মের বিকেল পার হয়ে সন্ধ্যার বাতাস, কখন অসময়ের বৃষ্টি তার ছাট-ঝাপটা নিয়ে পাড়ায় ঢুকল আবার চলেও গেল, সামনের গলি দিয়ে ঘটিগরম নিয়ে যাওয়া ক্যানিং-এর মথুর দাস-এর হাত-ঝুমঝুমির আওয়াজ, ঘরের মেঝে থেকে বারান্দার মাধবীলতার ডাল বেয়ে বেড়ালছানাদের ক্রমাগত ওঠানামা আর ছুটে বেড়ানো। এর মধ্যে কখন শেষ হয়ে আসত সেদিনের কবিতা-পাঠ।’ ওই দুই তরুণকে, এক অর্থে যাঁরা তাঁর কবিতার আত্মীয়স্বজন, বই বেরোনোর আগেই বইটার সব কবিতা শুনিয়ে দেওয়ার গল্প লিখেছেন জয় গোস্বামী, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত তাঁর সাম্প্রতিকতম বই দু দণ্ড ফোয়ারামাত্র-এর ভূমিকায়। ১৪১৮-র পঁচিশে বৈশাখ থেকে বাইশে শ্রাবণের মধ্যে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুচ্ছের সঙ্গে অপ্রকাশিত কিছু কবিতা যোগ করে এই দু দণ্ড...। আর এই দশ তারিখ, জয়ের জন্মদিনে, তাঁর যাদবপুরের বাড়িতে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হবে নতুন কবিতার বই আত্মীয়স্বজন (প্রতিভাস)। তাঁর কবিতার কিংবা কবিতার নেপথ্যের আত্মীয় যাঁরা তাঁদের নিয়ে কবিতারই এ বই। অনুষ্ঠানে কবিতাগুলি পড়বেনও কবি।

নির্জন বাজিয়ে
দুই ভাই নাকি গিয়েছিলেন উস্তাদ বিলায়েত খানের তালিম নিতে। যথারীতি উস্তাদজি দু’জনকেই বাজিয়ে শোনাতে বলেন। বড় ভাইয়ের বাজনা শুনে বলেন, তোমার বাজানোর হাত মিঠে, তুমি রবিশঙ্করের কাছে যাও। আর ছোটজনকে বলেন, তোমার বাজনদারি আমার মতো। আমি এ রকম বাজনা পছন্দ করি। সেই দুই ভাই হৃষিকেশ ও কাশীনাথ মুখোপাধ্যায়। হৃষিকেশ মুম্বইয়ে গিয়ে বিখ্যাত হয়ে যান, কাশীনাথ মা সরস্বতীর সেতারটি নিয়েই ছিলেন। ভাইফোঁটার দিন খুব ভোরে অকস্মাৎ চিরবিদায় নিলেন। এটাওয়া ঘরানার শিল্পী কাশীনাথ একজন প্রকৃত নির্জন বাজিয়ে ছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে যখন নিয়ম হল আকাশবাণীর কর্তাব্যক্তিদের বাজনা শোনানর পর তাঁরা স্থির করবেন কার কী মান, তখন তিনি নিঃশব্দে সরে এসেছিলেন। নিজের বৃত্তে জানিয়েছিলেন, ‘আমার মতো ছোট বাজিয়েরা কেন ওঁদের সময় নষ্ট করব।’ ভারতের অনেক জায়গায় বাজিয়ে পেয়েছেন আই টি সি সংগীতসম্মান। দাদার আহ্বানে মুম্বই গিয়েছিলেন সংগীত পরিচালনার জন্য, ফিরেও আসেন ‘রাজনীতি’ করে টিকে থাকবেন না বলে। তাঁর বাজনার গুণমুগ্ধ ছিলেন বড়ে গুলাম আলি খান, আমির খান, কেরামতুল্লা খান। রেখে গিয়েছেন অসুস্থ স্ত্রীকে, আর সেতারকে ঘিরে অজস্র স্মৃতি।

নাট্যব্যক্তিত্ব
নাসিরুদ্দিন সে দিন বলছিলেন নৈনিতালের স্কুলে ছাত্রাবস্থায় তাঁর দুর্দশার কথা, কী ভাবে দৈবাৎ শাইলকের ভূমিকায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে প্রচণ্ড স্নায়ুচাপে ভুগেছিলেন। তার পর যেই পর্দা উঠল, তিনি কিন্তু তখন ‘নেভার ওয়ান্টেড টু গেট অব দ্য স্টেজ’। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আমন্ত্রণে নবযুগ আচার্য স্মারক বক্তৃতা দিতে এসেছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ও নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরুদ্দিন শাহ। ২ নভেম্বর দারভাঙা হলে আয়োজিত তাঁর এই বক্তৃতা এক ঘণ্টা মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখল ছাত্রছাত্রীদের। বক্তৃতার বিষয় ছিল: থিয়েটার ও সাহিত্য। ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র ছাত্র ছিলেন নাসির। বলছিলেন, তাঁর শিল্পী-জীবনে আলকাজি ও জেফ্রি কেন্ডেলের ভূমিকার কথা। ইংরেজি নাটক তাঁর প্রিয়, আর তিনি মনেই করেন যে চলচ্চিত্রের নকল করার প্রয়োজন নেই নাটকের।

নিধিরাম

নিধিরাম সর্দার নয়, গোঁসাইবাগানের নিধিরাম। এই ‘ভূত’-এই এ বার বর্তমান হতে চলেছেন বাংলা ছবির ক্ষীণতনু অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সেই বিখ্যাত উপন্যাস গোঁসাইবাগানের ভূত এ বার চলচ্চিত্রে। পরিচালনা করছেন নীতীশ রায়। আর সেই ছবিতেই সম্ভবত জীবনের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি কাঞ্চন। এ ছবিতে কাঞ্চনকে তাঁর চিরপরিচিত চেহারায় দেখা যাবে না তেমন। মুখোশে তাঁর চেহারা এখানে বেশির ভাগটাই ভূতের মতন...। ছবির শু্যটিং শেষ, মুক্তি পাওয়ার কথা আগামী মাসে। ছবিতে স্বভাবতই আছে শীর্ষেন্দুর সেই আশ্চর্য চরিত্রগুলি রাম কবিরাজ, বুরুন, করালী মাস্টার, হাবু গুন্ডা। অভিনয়ে আছেন ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায়, শঙ্কর চক্রবর্তী, টিনু আনন্দ, পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বুরুনের চরিত্রে তোজো।
 

সুবিনয় ৯০

বিশ্বভারতী শিক্ষাভবনে রসায়ন পড়তে গিয়ে শিক্ষক হিসেবে পেলেন শৈলজারঞ্জন মজুমদারকে। তখন গান শিখতেই হত শান্তিনিকেতনে পড়লে। সেই ভাবেই তাঁর রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখা শুরু। শৈলজারঞ্জনের সেই উজ্জ্বল ছাত্রটির নাম সুবিনয় রায়। গান অবশ্য তিনি শুধু শৈলজারঞ্জনের কাছেই শেখেননি, নানা সময়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিখেছেন অনাদিকুমার দস্তিদার, রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দিরা দেবী প্রমুখের কাছে। জন্ম ১৯২১-এর ৮ নভেম্বর, এই শহরেই। প্রয়াত হন ২০০৪-এ। শান্তিনিকেতন থেকে ফিরেও রাশি রাশি রেকর্ড প্রকাশে কোনও দিনই মন ছিল না তাঁর। চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি প্রকাশিত হয় প্রথম রেকর্ড, দু’টি রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে ‘তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে’ আর ‘এই করেছো ভাল নিঠুর হে’। কিন্তু তার পরে প্রায় দেড় দশক সুবিনয় রায় কোনও রেকর্ড করেননি। নীরব, আত্মমগ্ন এই শিল্পী একক অনুষ্ঠানও করতেন কম। প্রথম একক সত্তরের দশকের গোড়ায়, স্টুডেন্টস হেলথ হোমের আয়োজনে রবীন্দ্রসদনে। তার পরে দীর্ঘ সঙ্গীতজীবনে অনুষ্ঠান করেছেন কমই। তাঁর একানব্বইতম জন্মদিনে রবিবার রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনে আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ সঙ্গীতসন্ধ্যার। আয়োজনে সুবিনয় রায়েরই হাতে গড়া সঙ্গীতসংস্থা ‘শ্রুতি পরিষদ’। সুবিনয় রায়ের স্মৃতিচারণ করবেন সুদেব গুহঠাকুরতা, গাইবেন শিল্পীপুত্র সুরঞ্জন। আগামিকাল, সুবিনয়ের জন্মদিনে ভারতীয় বিদ্যাভবনের আয়োজনে কথায়-গানে শিল্পীর নব্বই-পূর্তি উদ্যাপন। বলবেন সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপ মতিলাল, গৌতম ঘোষ, পঙ্কজ সাহা এবং অঞ্জন বসু। গানে আশিস ভট্টাচার্য।
   


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.