দলের নির্দেশে আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ার অবস্থান থেকে সরলেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তমসের আলি।
গত ২ নভেম্বর তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসে পুকুর সংস্কার, পাট কাটা, চাষের কাজে মজুর না পাওয়ার অভিযোগ করে জেলাশাসককে চিঠি দেন। লিখেছিলেন, তাঁর চাষ আবাদে, ছোটভাই সরকারি কর্মী আমজাদ হোসেন এবং দেওচড়াইয়ের প্রাক্তন প্রধান শাহাবুদ্দিন মিয়াঁকে ফসলকাটা-সহ অন্যান্য কাজে বাধা দিচ্ছে তৃণমূলের লোকজন। তৃণমূলের ওই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সপরিবারে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন তমসের।
শনিবার দুপুরে কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে দলের সম্পাদক মণ্ডলীর বৈঠকের পর নিজের পুরনো বিবৃতি থেকে একশো আশি ডিগ্রি অবস্থান বদলে ফেলেন তমসের। সিপিএমের ওই প্রাক্তন বিধায়ক সংবাদমাধ্যমে এ ব্যাপারে কাঠগড়ায় তুলেছেন। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক চণ্ডী পালের পাশে বসে এ দিন তিনি বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে আমার আত্মহত্যার হুমকি সংক্রান্ত খবরে কিছুটা বিকৃতি হয়েছে। আমি বলেছিলাম আমার ছোট ভাই দেওচড়াইয়ের প্রাক্তন প্রধান-সহ অনেকের উপর ধারাবাহিক নিপীড়ন করছে তৃণমূল।” তিনি বলেন, “যা পরিস্থিতি তা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে সকলের আত্মহত্যা করা ছাড়া পথ নেই। আমি আত্মহত্যা করলে অনেক আগেই করতাম। সেটা আমার পথ নয়। পালিয়ে যাব না। আক্রমণ প্রতিরোধ করে লড়াই করে মরব।”
তিনি যে ব্যাখ্যাই দিন তমসের যে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তা নিয়ে সংশয় নেই দলের জেলা নেতাদের মধ্যেই। খোদ জেলা সম্পাদক চণ্ডী পালের বক্তব্যেই যা আরও স্পষ্ট হয়েছে। চণ্ডীবাবু বলেন, “আমরা আত্মহত্যায় বিশ্বাস করি না। দিনের পর দিন তৃণমূলের লোকজন অমানবিক ভাবে চাষআবাদ বন্ধ করে, বাড়ি যাতায়াতের রাস্তায় হেনস্থা করে সমস্যা তৈরি করছে। তাতে ক্ষোভের জেরে উনি হয়ত আত্মহত্যা ছাড়া পথ নেই বলেছেন। আমরা অবশ্য রাজনৈতিক লড়াইয়ের জন্য তৈরি রয়েছি।” এই পরিস্থিতিতে আজ, রবিবার তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়কের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শনিবার সরাসরি তমসের আলিকে ফোন করে তাঁর বাড়িতে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন তিনি। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “আমার বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা তমসের কিছু সমস্যা নিয়ে সংবাদপত্রে বলেছেন। তা দেখেই ওঁকে ফোন করে রবিবার সকালে যাওয়ার কথা বলেছি। ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানাব। এক সঙ্গে চাও খাব।” তমসের জানান, রবীন্দ্রনাথবাবু তাঁর বাড়িতে আসতে চেয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু জানতে চাইলে সমস্যার কথা তিনি জানাবেন। |