বঙ্কিম সেতুর পরে হাওড়া আদালত চত্বর।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নিরাপত্তার স্বার্থে এ বার হাওড়া আদালত চত্বরে ‘মঙ্গলা হাট’ বসা বন্ধ করে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে আদালত চত্বরের ভিতর অবাধে গাড়ি ‘পার্কিং’। এ জন্য আদালত চত্বর পাঁচিল দিয়ে ঘিরে গেট বসানো হবে। প্রতি গেটে রাখা হবে সশস্ত্র পুলিশ-প্রহরা। লাগানো হবে ক্লোজড-সার্কিট ক্যামেরা। ঠিক হয়েছে, সকাল ৯টার আগে আদালত চত্বরের কোনও গেট খোলা হবে না এবং একমাত্র প্রশাসনের দেওয়া ‘পার্কিং-স্টিকার’ লাগানো গাড়িই আদালত চত্বরের ভিতরে রাখা যাবে।
শনিবার হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) বিজয় ভারতীর নেতৃত্বের এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল হাওড়া আদালত চত্বর ঘুরে দেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দলে ছিলেন হাওড়ার জেলা ও দায়রা বিচারক অশোককুমার মিশ্র, অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) সুমনজিৎ রায়, হাওড়া ক্রিমিনাল কোর্ট বার লাইব্রেরির সভাপতি সমীর বসুরায়চৌধুরী-সহ রাজ্য পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। পরে বিজয় ভারতী বলেন, “সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পরে কলকাতা হাইকোর্ট প্রতিটি আদালত চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। সেই মতো হাওড়া আদালতেরও নিরাপত্তা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।” দুর্ঘটনা এড়াতে গত মাসেই বঙ্কিম সেতুতে হকারদের বসা বন্ধ করে দেয় হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। পুর্নবাসনের দাবিতে হকারেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান। বঙ্কিম সেতুতে একাধিক বার বিক্ষোভ-মিছিলও করেন। কিন্তু রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয়, ওই সেতুতে কোনও ভাবেই হকারদের বসতে দেওয়া হবে না। তাঁদের অন্য জায়গায় পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। যদিও সেই সমস্যার সমধান এখনও পর্যন্ত হয়নি। এর মধ্যেই জেলা আদালত চত্বর থেকে ‘মঙ্গলা হাট’ সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, হাওড়া আদালত চত্বরের ভিতর রয়েছে পুরানো কালেক্টরেট বিল্ডিং, বার লাইব্রেরি-সহ একাধিক সরকারি অফিস। ওই চত্বরে অবাধে হাট বসত। অনেক ‘অবাঞ্ছিত’ লোকজনের আনাগোনা ছিল। সবই বন্ধ করে দেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে খুব শীঘ্রই আদালতের প্রতিটি গেটে পুলিশ-প্রহরা বসানো হবে।
হাওড়া আদালত চত্বরের উত্তর দিকে অর্থাৎ, হাওড়া পুরসভার দিকে কোনও পাঁচিল নেই। পুলিশ-পাহারার ব্যবস্থাও ছিল না। আইনজীবীরা দীর্ঘ দিন ধরে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। এখন ঠিক হয়েছে, পুরসভার দিকে প্রাচীর দেওয়া হবে। রাত ৮টার পর আদালতের সব গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। |