ভাঙড় এলাকার ‘ঘরছাড়া’দের ঘরে ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ জানানোর পর হাতেনাতে ‘সুফল’ পেলেন সিপিএমের বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। শনিবার সকালে ঘরছাড়া কর্মী-সমর্থকদের বেশিরভাগই ঘরে ফিরে আসায় ‘সন্তুষ্ট’ রেজ্জাক মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অভিনন্দন’ও জানিয়েছেন। প্রশাসক মমতার তৎপরতায় ‘খুশি’ রেজ্জাক এ দিন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনতে। উনি আমার অনুরোধ রেখে ঘরছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে আনায় ওঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।” |
ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানা এলাকার নারায়ণপুরে গ্রামে ফিরছেন ঘরছাড়ারা। শনিবার। ছবি: সামসুল হুদা |
রেজ্জাক-মমতার এই ‘অনুরোধ-অভিনন্দন’ সিপিএমের অন্দরে যথেষ্ট ‘অস্বস্তি’ তৈরি করল বলে বিরোধী শিবিরের একাংশ মনে করছে। ঘটনাচক্রে ‘সন্ত্রাস’ বন্ধ করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ‘ঘরছাড়া’দের ঘরে ফিরিয়ে আনতে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে অনুরোধ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু সেই সব চিঠির একটিরও এখনও পর্যন্ত জবাব মেলেনি বলে দাবি সূর্যবাবুর। অথচ যাঁকে নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা কারণে দলকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে, সেই ‘বিতর্কিত’ রেজ্জাক মোল্লার ‘আর্জি’র এমন চটজলদি ‘সরকারি প্রতিকার’ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে সিপিএমের অন্দরের ‘বিভাজন’ মমতা আরও খানিকটা ‘উস্কে দিলেন’ বলেই মনে করছে বাম শিবিরের একাংশ।
গত সোমবার একেবারে ‘নিজস্ব উদ্যোগে’ মহাকরণে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক রেজ্জাক। অনুরোধ জানান, ঈদের আগে ভাঙড়ের ৮৩ জন সিপিএম কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে। রেজ্জাকের ‘অনুরোধ’ শুনে রেজ্জাকের সামনেই সরাসরি প্রশাসন এবং দলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের ওই বিষয়ে ‘উদ্যোগী’ হওয়ার নির্দেশ দেন মমতা। নির্দেশের পাঁচ দিনের মাথায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ জীবনতলা থানা এলাকার নারায়ণপুরের ৭২ জন ঘরছাড়াকে খুঁজে বার করে শনিবার ঘরে ফিরিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, “যে ৭২ জনকে ঘরে ফিরিয়ে আনা গিয়েছে, তাঁরা ঘুঁটিয়ারিশরিফ ও ভাঙড় এলাকাতেই ছিলেন। বাকিদের খোঁজ চলছে।” |