পাঁচ পয়েন্টের আশায় আগেই জলাঞ্জলি। গুজরাত ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়ার আশাও গঙ্গার জলে ডুব দেব দেব করছে।
করবে না-ই বা কেন? যে দলের অভিজ্ঞ বোলাররা গুজরাতের মতো নিরীহ বিপক্ষের বিরুদ্ধে গোটা দিন বল করে তিনশো-র বেশি রান দিয়ে মাত্র দুটো উইকেট পাচ্ছেন, সেই দলের এই অবস্থায় পড়াই তো স্বাভাবিক। অথচ শনিবার সকাল-সকাল রণ-দিন্দারা দু’তিনটে উইকেট তুলে নিতে পারলে দিনের শেষে ছবিটা অন্য রকম হতেই পারত। ঘরের মাঠে সাড়ে পাঁচশো-র উপর রানের পুঁজি নিয়ে বল করতে নেমে ঝাঁপিয়ে পড়া দূরের কথা। পার্থিবদের কাছে নীরবে আত্মসমর্পণ করল বাংলা বোলিং। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কিছুক্ষণের জন্য দলকে মাঠে নেতৃত্ব দিলেন। ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ, স্কোয়ার লেগ রেখে পার্থিবদের জন্য আক্রমণাত্মক ফিল্ড সাজালেন। সৌরাশিস লাহিড়িকে দিয়ে রাউন্ড দ্য উইকেট বল করালেন। ৫৭তম ওভারে আবার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও হাত ঘোরালেন। কিন্তু কোথায় কী?
পার্থিব পটেল তো তা-ও আন্তর্জাতিক বোলিং মোকাবিলা করে অভ্যস্ত। ২০২ বলে তাঁর ১৪৩ রানের ইনিংসে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু পার্থিবের পাশাপাশি হেসেখেলে সেঞ্চুরি করে গেলেন প্রিয়াঙ্ক পাঞ্চাল-ও। গত বছরই যিনি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে অভিষেক ঘটিয়েছেন। ষোলোটা বাউন্ডারি, তিনটে ছক্কা মেরে ফুরফুরে ১৩৯ করে ইরেশ সাক্সেনার বলে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরলেন বছর একুশের প্রিয়াঙ্ক। তাতে অবশ্য অসুবিধা হয়নি। ততক্ষণে যথেষ্ট ভাল জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে গুজরাত। আর পার্থিবদের পাশাপাশি ইডেনে হাজির গুটিকয়েক দর্শকও বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন, ব্যাটসম্যান নিজে ভুল না করলে ইডেনের এমন শান বাঁধানো পিচে উইকেট তোলা প্রায় অসম্ভব। দিনের শেষে গুজরাত অধিনায়ক বলেও দিলেন, “ভাবতে পারিনি উইকেট এতটা ফ্ল্যাট হবে। রণদেবদের বলের গতি ছিল না বলা যাবে না। আসলে উইকেটেই পেস ছিল না।”
বিকেলে ইডেন থেকে বেরোতে বেরোতে প্রায় একই কথা বলে গেলেন দীপ দাশগুপ্ত, “উইকেট আর খারাপ বোলিং এই দুটো কারণেই বাংলার এই অবস্থা। আজ দু’টো ব্রেক-থ্রু এল চা বিরতিরও পরে!” তবে তিন পয়েন্টের আশা এখনই ছাড়ছেন না বাংলার প্রধান নির্বাচক। “ক্রিজে দু’জন নতুন ব্যাটসম্যান আছে। ইডেনের উইকেট চতুর্থ দিনে ভাঙে। বল ঘোরে। তিন পয়েন্ট আসতে পারে এখনও। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট যে রকম চাইছে, প্রবীরদা সে রকম উইকেট দিতে পারলে ভাল হয়।”
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলা ৫৬০-৬ ডিঃ। গুজরাত ৩১৫-২ (পার্থিব ১৪৩, প্রিয়াঙ্ক ১৩৯, সৌরাশিস ১-৭৪, ইরেশ ১-৯৭)। |