হাজতবাসের রায় পাওয়া তিন কলঙ্কিত ক্রিকেটারকে বাঁচানোর চেষ্টা শুরু হয়ে গেল। এবং সেই চেষ্টা শুরু হয়েছে একেবারে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক মহল থেকে। এ দিন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে সলমন বাটদের জেল হওয়া নিয়ে পাক ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি তাঁর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে পাক বোর্ডের ভূমিকা নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট নন পাক প্রেসিডেন্ট। একই সঙ্গে জারদারি পাক বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন, জেল হওয়া ক্রিকেটারদের যাতে সব রকম আইনি সাহায্য দেওয়া হয় সেটা পাক বোর্ডকেই দেখতে হবে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিক জানিয়েছেন, স্পট ফিক্সিং নিয়ে পাক বোর্ডের ভূমিকায় প্রবল ক্ষুব্ধ পাক প্রেসিডেন্ট। জারদারিই আবার পাক বোর্ডের পেট্রন-ইন-চিফ।
আশ্চর্যের হচ্ছে, পাক প্রেসিডেন্ট যেখানে দোষী ক্রিকেটারদের রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানে প্রাক্তন পাক অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি আবার জানিয়েছেন, জুয়াড়ি মাজহার মজিদ তাঁকেও প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। “ও সব সময় আমার সঙ্গে আলাদা দেখা করতে চাইত। হোটেলে একান্তে কথা বলতে চাইত। ওর ভাই আজহারও আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি সব সময় ওদের এড়িয়ে গিয়েছি,” বলেছেন আফ্রিদি। মহম্মদ আমেরের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে আফ্রিদি বলেছেন, “আমের দুর্দান্ত প্রতিভা। আমার মনে হয় কাঁচা বয়সের জন্যই ও ফাঁদে পড়ল।” |
এ দিকে, রেহমান মালিক আবার জানিয়েছেন, জারদারি চান পাক বোর্ড স্পট ফিক্সিং নিয়ে সম্পূর্ণ রিপোর্ট তাঁর কাছে পাঠাক। পাক বোর্ডকে তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, অপরাধী সাব্যস্ত হওয়া তিন ক্রিকেটারকে কী করে জামিনে মুক্ত করা যায় তার রাস্তা খুঁজে বার করতে। পাক প্রেসিডেন্টের নির্দেশ মতো মালিক ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডে পাক হাইকমিশনার ওয়াজিদ সামসুল হাসানের সঙ্গে কথা বলেছেন। ষড়যন্ত্রের কাহিনিও বেরিয়ে পড়েছে। জারদারি বলেছেন, তাঁদের দেশের তিন ক্রিকেটারকে ফাঁসানো হল কি না সেটা খুঁজে বের করা দরকার।
পাক সরকার এবং মালিকের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার রশিদ লতিফ। “এখন রিপোর্ট চাওয়ার কী মানে বুঝতে পারছি না। বিচার শুরু হয়েছিল সেই জুনে। তখন সরকার কী করছিল,” বলেছেন লতিফ। আর এক প্রাক্তন পাক অধিনায়ক মুস্তাক মহম্মদ মনে করেন, সলমন বাট-রা অনেক কম শাস্তি পেয়েছেন।
শোনা যাচ্ছে, মহম্মদ আসিফ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারেন। আসিফকে আবার ‘ওপেন’ জেলে সরানো হতে পারে। অর্থাৎ আসিফ জেলে থেকেও কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন।
আবার সদ্য পাকিস্তানের প্রধান কোচ থেকে সরে যাওয়া ওয়াকার ইউনিস আশা করছেন, লন্ডন আদালতের রায় ক্রিকেটকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সাহায্য করবে। ও দিকে পাক সরকার যখন ক্রিকেট বোর্ডকে নির্দেশ পাঠাচ্ছে সলমন বাটদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, তখন পাক ক্রিকেট বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছে, স্পট ফিক্সিং নিয়ে তারা অভ্যন্তরীণ তদন্ত করবে। সব মিলিয়ে সলমন বাটদের নিয়ে পাকিস্তানের আকাশে বিভ্রান্তি আর ধোঁয়াশা। |