ঝাড়খণ্ড রাজধানীর বুকে রাজভবনের অদূরে অতিবৃদ্ধ এক দম্পতিকে ঘিরে আজ রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। জানা যায়, পেনশনের দাবিতে অনশন আন্দোলন শুরু করেছেন ৯৯ বছর বয়স্ক ভাগাইয়া রাম ও তাঁর ৮৫ বছরের স্ত্রী চামনি দেবী। তাঁরা এসেছেন ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলার হীরাকুণ্ঠারি গ্রাম থেকে।
ভাগাইয়া রামের পরিচয় জানার পর সকলেই হতবাক। গোড়ায় তিনি নিজে খুব একটা মুখ না খুললেও তাঁ স্ত্রী চামনি দেবী বলেন, “ব্রিটিশ আমলে আমরা ভারত ছাড়ো আন্দোলন ও লবণ সত্যাগ্রহে অংশ নেওয়ার জন্য তিন তিনবার জেল খেটেছি। গোড্ডা ও দেওগড়ে তখন গাঁধীবাবার ডাকে কত লোক যে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল। সে দিনগুলোর কথা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। কিন্তু আজ আমাদের কথা কেউ ভাবে না বলেই অনশনে বসতে হয়েছে।”
বয়সের ভারে জীর্ণ ভাগাইয়া রাম কম্পিত কণ্ঠে বলেন,“ জেল থেকে বেরিয়ে আবার আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এ বার ফৌজদারি মামলায় জড়িয়ে ব্রিটিশ পুলিশ পাঠিয়ে দিল জেলে।
প্রথমে গোড্ডা, সেখান থেকে দুমকা জেলে।” সেই মামলার কাগজ আজও রেখে দিয়েছেন ভাগাইয়া। কাগজে লেখাক্রিমিনাল কেস নম্বর ১৬১/১৯৪৫ (এম্পারার ভার্সেস চেদি রাউত)। কাগজটি সাংবাদিকদের দেখান বৃদ্ধ।
দম্পতির অভিযোগ, তাঁরা আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন। কিন্তু বহু চিঠিচাপাটি করেও সরকারের কাছ থেকে কোনও সাড়া পাননি। জোটেনি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য বরাদ্দ পেনশনও। কর্তৃপক্ষকে তাঁরা গত ১৩ অক্টোবর আগাম জানিয়ে রেখেছিলেন, ৫ নভেম্বর থেকে তাঁরা অনশন আন্দোলনে বসতে বাধ্য হবেন।
ঝাড়খণ্ড সিনিয়র সিটিজেনস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান অরুণ কপমার পাণ্ডে সাধ্যমতো সাহায্য করেন এই দম্পতিকে। তিনি জানান, ১৯৭২ সাল থেকে চালু হয় স্বতন্ত্রতা সৈনিক সম্মান পেনশন। প্রাক্তন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা এই প্রকল্প অনুসারে মাসে তিন হাজার টাকা করে পেনশন পাওয়ার অধিকারী। এই বৃদ্ধ দম্পতিকে পেনশনের জন্য এই বয়সে অনশনে বসতে হল, এটাই তো স্বাধীন দেশের লজ্জা। |