দু’মাসের মধ্যে অভিষেকের সম্ভাবনা
রাহুলকে সভাপতি চেয়ে দলে জোরালো হচ্ছে দাবি
ত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী বাছাই থেকে শুরু করে কৌশল নির্ধারণ সব দায়িত্বই তাঁর কাঁধে। ইদানীং দল ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াতেও সামিল হচ্ছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে রাহুল গাঁধীকে যত দ্রুত সম্ভব কংগ্রেস সভাপতি পদে বসাতে ক্রমেই চাপ বাড়ছে দলের মধ্যে। কংগ্রেসের একটা বড় অংশ চাইছেন, আগামী দেড়-দু’মাসের মধ্যেই রাহুলের সেই অভিষেক হয়ে যাক।
রাহুলের রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের দাবি নতুন নয়। তবে গত অগস্টে অস্ত্রোপচারের জন্য সনিয়া গাঁধী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে সেই দাবি জোরালো হয়েছে। সে সময় সনিয়ার অনুপস্থিতিতে কংগ্রেসের সাংগঠনিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য চার সদস্যের যে কমিটি তৈরি হয়েছিল, তাতে কংগ্রেস সভানেত্রী নিজেই রাহুলকে মনোনীত করেছিলেন। অনেকেই তার পরে বলছেন, সেই মনোনয়নের মধ্যেই নিহিত ছিল রাহুল গাঁধীর রাজনৈতিক উত্তরণের ইঙ্গিত।
কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, দলের সভাপতি পদে রাহুলের অভিষেকের জন্য সম্প্রতি চাপ বাড়ার সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মূল দাবিটা ছিল, রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী করা হোক। তাঁর বাবা, প্রয়াত রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ৪০ বছর বয়সে। রাহুলের বয়স এখন ৪১ বছর। সব দিক থেকেই তাই দাবিটা জোরদার হচ্ছিল। অথচ গাঁধী পরিবারের তরুণ প্রজন্ম এখনই সেই দায়িত্ব নিতে রাজি নন। তা ছাড়া সরকারের দায়িত্ব নেওয়া মানে চলতি প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার বোঝা কাঁধে নেওয়া।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের একটা বড় অংশের নেতা-কর্মী মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী পদে না এলেও দলের সভাপতি হতে রাহুলের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া উপর্যুপরি দুর্নীতির ঘটনা, অণ্ণা হজারের আন্দোলন ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে নেতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে সর্বোচ্চ নেতৃত্বে নতুন মুখ প্রয়োজন। এই ভাবে মানুষের কাছে একটা বার্তাও দেওয়া হবে। রাহুলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ, তিনি যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। রাহুল সভাপতি হলে কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মীরাও উজ্জীবিত হবেন।
গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠরাও এখন প্রকাশ্যে রাহুলের রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য সওয়াল করছেন। ১০ নম্বর জনপথের ঘনিষ্ঠ সুমন দুবের পুত্র অমিতাভ দুবে সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রে রাহুলকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মতেও, এখনই নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়া উচিত রাহুলের।
১০ জনপথের উপরে দলীয় নেতা-কর্মী এবং ঘনিষ্ঠদের এই চাপ বাড়ছে। অনেকেই এখন চাইছেন, ১৯ নভেম্বরের আগে রাহুলের অভিষেক হয়ে যাক। ১৯ তারিখ ইন্দিরা গাঁধীর জন্মদিন। কারও বা মত, খুব বেশি দেরি হলে ২৮ ডিসেম্বরে হোক অভিষেক। সে দিন কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, রাহুলকে দলের সভাপতির পদে বসাতে গেলে দলের ওয়ার্কিং কমিটির একটি বৈঠক ডাকা জরুরি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে এক দিনের জন্য সর্বভারতীয় কংগ্রেসের একটি অধিবেশন ডেকে রাহুলকে সর্বসম্মত ভাবে সভাপতি মনোনয়ন করা যেতে পারে।
এ ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দিগ্বিজয় সিংহ আজ বলেন, “রাহুল সভাপতি পদের দায়িত্ব নিলে কংগ্রেসের যে ভাল হবে, তা নিয়ে সংশয় নেই। অচিরেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর সেই উত্তরণের যে সম্ভাবনা রয়েছে, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” অন্য দিকে কংগ্রেস মুখপাত্র রশিদ আলভিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বিষয়টি কংগ্রেসের একেবারেই অভ্যন্তরীণ বিষয়। প্রকাশ্যে আলোচনার জন্য নয়। দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হবে।”
তবে কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, গত দু’মাস ধরে রাহুলের কাজের পরিধি যে বেড়েছে, তা বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধু দলের নেতারা নন, সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গেও তিনি বিভিন্ন বিষয়ে এখন নিয়মিত বৈঠক করেন। তা ছাড়া উত্তরপ্রদেশের মতো হিন্দিবলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে বিধানসভা ভোটের যাবতীয় দায়িত্ব এখন রাহুলেরই হাতে। ১০ জনপথে উত্তরপ্রদেশের প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠকেও আজ রাহুল উপস্থিত ছিলেন। ৮০ জন প্রার্থীর নাম ওই বৈঠকে চূড়ান্ত হয়েছে।
তবে রাহুলকে এখনই সভাপতি পদের দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে ভিন্ন মত যে একেবারে নেই, তা নয়। কংগ্রেসের এক কেন্দ্রীয় নেতা ঘরোয়া আলোচনায় আজ বলেন, উত্তরপ্রদেশে ভোটের পরও সেই পদক্ষেপ করতে পারে কংগ্রেস। কারণ কোনওক্রমে যদি উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ফল ভাল না হয়, তখন বিরোধীরা বলবে, রাহুল দলের দায়িত্ব নেওয়ার পরই বিপর্যয় হল।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.