বন্ধ দরজার নীচ দিয়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছিল গলগলিয়ে। ডাকাডাকিতে সাড়া মেলেনি ঘরের ভিতরে থাকা যুবকের। পরিজনেরা ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন, পুড়ে যাওয়া বিছানায় অর্ধদগ্ধ শরীরে পড়ে রয়েছেন সায়ন চৌধুরী (৩২)। পরে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে পাটুলির কেন্দুয়া মেন রোডে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, শুক্রবার রাতে ল্যাপটপে কাজ করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সায়ন। গভীর রাতে শর্ট-সার্কিট থেকে তাতে আগুন লেগে বিছানায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু আগুনের আঁচেও তাঁর ঘুম ভাঙল না কেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁর শরীরে কোনও মাদকের প্রভাব ছিল কি না, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, কেন্দুয়ার ওই দোতলা বাড়িতে যৌথ পরিবারে থাকতেন একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার সায়ন। মাস পাঁচেকের সন্তান নিয়ে তাঁর স্ত্রী গত কয়েক দিন ধরে বাপের বাড়িতে ছিলেন। পরিজনেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ খাওয়া সেরে দোতলায় নিজের ঘরে চলে যান সায়ন। অন্যেরা থাকেন একতলায়।
এ দিন সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বাড়ির কাজের লোক গিয়ে সায়নের ঘরের দরজার নীচ থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। এর পরেই বাড়ির সকলে মিলে দরজা ভেঙে ফেলেন। অন্ধকার ঘর তখনও ধোঁয়ায় ভর্তি। জানালা খুলতেই দেখা যায়, পোড়া বিছানায় তাপে দুমড়ে যাওয়া ল্যাপটপ, আইপড আর অর্ধদগ্ধ সায়ন।
কয়েক বছর আগেই সায়নের দাদা ক্যানসারে মারা গিয়েছেন। তার পরে এই ঘটনায় কার্যত বাকরুদ্ধ চৌধুরী পরিবারের সকলে। সায়নের বাবা বিকাশ চৌধুরীও কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তী সেন বলেন, “তদন্ত চলছে।” দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। |