থ্রি ইডিয়ট্স-এর ভাবনাকেই স্বাগত জানালেন বড়রা
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আজকের তরুণদের ‘থ্রি ইডিয়ট্স’ হওয়ার পরামর্শ দিয়ে গেলেন বড়রা। যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এক আলোচনাসভায়।
থ্রি ইডিয়ট্স মানে, চেতন ভগতের কাহিনি অবলম্বনে আমির খানের বিখ্যাত সেই ছবি। সে ছবির বটমলাইন ছিল একটাই...মা-বাবার চাপে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়। বরং তোমার যা করতে ভাল লাগে, সেটাই করো!
প্রায় সেই ছবির ‘রাঞ্চো’র ঢঙেই শনিবার সকালে ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অব সায়েন্স’-এর মহেন্দ্রলাল সরকার অডিটোরিয়ামে আলোচনার সুর বেঁধে দিয়েছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার। “আমি মনে করি না আজকের ছেলেমেয়েরা শুধুই কেরিয়ারিস্ট। দোষটা অভিভাবকদের। আমরা, অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের সব সময় একটা নির্দিষ্ট ফ্রেমে ঢুকিয়ে দিতে চাই।” ব্যাস, আর কে পায়! ‘আজকের যুবমনব্যক্তি বনাম সমাজ’ শীর্ষক সেই আলোচনায় সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতা, “এখন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও মা-বাবার উচ্চাশা, ছেলেকে ক্রিকেটার বানাতে হবে। ছেলের হয়তো ক্রিকেট ভাল লাগে না, ভাল লাগে গান গাইতে বা ছবি আঁকতে। কিন্তু শোনে কে?”
টেকনো ইন্ডিয়ার শিক্ষা-প্রশাসক মানসী রায়চৌধুরীর অভিজ্ঞতাও সে রকম, “আমরা অভিভাবকেরাই জানি না, আমরা কী চাই! ছেলে বিজ্ঞান ভালবাসে না, সে রকম নম্বরও নেই। অথচ ক্লাস ইলেভেনে ভর্তির সময়ে মা-বাবার একটাই অনুরোধ। ওকে সায়েন্সে দিন না, প্লিজ!” অবশ্য বিজ্ঞান পড়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়া এবং অগাধ টাকা মানেই যে জীবনে জেতা নয়, মনে করিয়ে দিলেন মনোবিদ কামাল হোসেন। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কিশোর ছেলেরা অবশ্য মাতল অভিনেতা দেবশঙ্কর হালদারের কথায়, ‘‘তোমাদের সকলের প্রেম হোক। আর ভাল হোক!” ভালর গাইডলাইন দিয়েও দিলেন বাংলা ব্যান্ড ‘শহর’-এর অনিন্দ্য: ‘‘ভাল গান শোনো, ভাল আড্ডা মারো। বড়দের সম্মান করো। ছোটদের স্নেহ করো।”
বড়দের সম্মান, ছোটদের স্নেহ। মানে, অন্যের কথা ভুলো না। অন্যরা আছে বলেই তুমি আছো। অনুষ্ঠানের শুরুতে পড়ে শোনানো হল বিনায়ক সেনের চিঠি। ছত্তীসগঢ়ে কী ভাবে আদিবাসীদের উৎখাত করা হয়েছে! কল্যাণীর ছেলে ছত্তীসগঢ়ের প্রান্তবাসীদের মধ্যে কী ভাবে কাজ করেছেন।.সামাজিক দায়বোধ আজও হারায়নি। সেই সামাজিক দায় থেকেই সুন্দরবনের গল্প শোনালেন শ্রীজাত। সেখানে গত সপ্তাহে ১৬/১৭ বছরের একটি মেয়েকে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, তুমি বড় হয়ে কী হতে চাও? মেয়েটি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল। এই প্রশ্ন সে কোনও দিন শোনেনি। শপিং মলে লো কাট, টপ আর ভ্যাম্পায়ার সিরিজের ভক্ত কিশোরী বাঙালি মেয়ের মতো সে ও তো এই সমাজের, এই যুবমনের অংশ!
সেই যুবমন কী রকম? সঞ্চালক সুমন মুখোপাধ্যায় একবার দর্শকদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন, নিবারণ চক্রবর্তী কোন উপন্যাসে আছে। মাত্র তিনটি হাত উপরে উঠল। এ সব সিলেবাসে নেই যে! বড় হওয়ার সিলেবাসটা অবশ্য দেখিয়ে দিলেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। “কাউকে মেয়েলি বলো না। আর যৌনতা নিয়ে যে সব চুটকি, রসিকতা সেগুলিকে প্রশ্রয় দিও না। যৌনতা স্বাভাবিক ব্যাপার। কেউ সমকামী হোক বা মেয়েলি হোক, তার ব্যাপার। কিন্তু তোমাদের হাত ধরেই সমাজটা বদলাবে। যৌনতাকে তাই সামাজিক স্বীকৃতি দিতে শেখো।’’
এ ভাবেও ‘আর একটি প্রেমের গল্প’ লেখা যায়, দিন বদলের স্বপ্ন দেখা যায়!
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.