|
|
|
|
নিলাম রুখলেন তৃণমূল সভাপতি |
বিধি ভেঙে নেতার ভাইকে বরাত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তুফানগঞ্জ |
বিধি ভেঙে দলের এক যুব নেতার ভাইকে কম দামে ৪২টি গাছ কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় দলীয় পর্যায়ে তদন্ত শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। তুফানগঞ্জের দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটেছে। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার ওই অভিযোগ শোনামাত্রই বিক্রির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রধানকে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেছেন, “গুরুতর অভিযোগ। ওই নিলাম প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার জন্য বলেছি। সমপ্র্ণ স্বচ্ছ ভাবে কাজ করতে হবে। আমরা দলীয় পর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছি। রিপোর্ট হাতে পেলেই ব্যবস্থা নেব।” পাশাপাশি, বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনও ফোন করে তুফানগঞ্জ-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতিকে ওই গাছ কাটা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন। পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রের খবর, বাম জমানায় কদমতলা থেকে দেওচড়াই বাজারগামী রাস্তার দু’ধারে প্রচুর গামার, চাপ, শিমুল গাছ লাগানো হয়। গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ওই গাছগুলি রয়েছে পূর্ত দফতরের জমিতে। কিন্তু পূর্ত দফতর, বন দফতর বা প্রশাসন কোনও মহলকে না জানিয়ে তার মধ্যে ৪২ টি গাছ মাইকে প্রচার নিলাম করা হয়। দেওচড়াইয়ের বাসিন্দা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “ওই ৪২ টি গাছের দাম প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা হবে। কারও অনুমতি ছাড়া, সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে স্রেফ দলের নেতার আত্মীয় তা এক লক্ষ টাকায় বিক্রির চেষ্টা তৃণমূলের লুঠেপুটে খাওয়ার রাজনীতি ফের স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঘটনার কথা জানার পর আমি নিজেই সব মহলে বিষয়টি নিয়ে ফোনে অভিযোগ জানিয়েছি। রবীন্দ্রনাথবাবু শেষ পর্যন্ত ওই নিলাম বন্ধের নির্দেশ দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন।” প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবার দেওচড়াইয়ে গিয়ে ঘটনার সরেজমিন তদন্ত করেন ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিডিও তাপস সিংহরায় বলেন, “নিলাম নিয়ে অভিযোগ পেয়ে জয়েন্ট বিডিওকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি।” কোচবিহারের ডিএফও পিনাকী মিত্র, পূর্ত (রোড়) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমিত সাহারাও বলেন, “ওই সব গাছ নিলাম নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের কিছু জানায়নি। নিয়ম অনুযায়ী, ওই দুই দফতরের সঙ্গে বিডিও’র ছাড়পত্র নিয়ে নিলাম ডাকার কথা।” দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান গোবিন্দ বর্মন বলেন, “বন দফতর, পূর্ত দফতরের অনুমতি নিয়েই ভবিষ্যতে ওই ৪২ টি গাছ বিক্রির জন্য নিলাম ডাকা নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে বৃহস্পতিবারের নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে আর এগোতে চাইছি না।” যার আত্মীয় নিলামে ওই গাছ কেনেন সেই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দেওচড়াই অঞ্চল সভাপতি মলয় দাস বলেন, “৭০-৮০ জনের সঙ্গে আমার ভাইও নিলামে অংশ নেন। সর্বোচ্চ দর ডাকায় সে বরাত পায়।, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে নিলাম বন্ধ রাখা হলেও এটুকু বলতে পারি, ওই সব গাছের দাম দু’লক্ষও হবে না।” দেওচড়াইয়ের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি কবীর আলির বক্তব্য, “কে কি বলছেন জানি না। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা সভাপতি যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা মেনেই কাজ করতে প্রধানকে বলে দিয়েছি।” |
|
|
|
|
|