মূক-বধিরের সদ্যোজাতকে মুখে কাপড় গুঁজে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে, এ অভিযোগে বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চাঁচলের মালতিপুর হাসপাতাল। এক স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, বাড়ির এক জন মর্যাদাহানির আশঙ্কায় ওই কাজ করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, স্বাস্থ্যকর্মী তা নিয়ে হইচই শুরু করায় শিশুটি রক্ষা পেয়েছে। খবর পৌঁছে যায় রাজ্যের শিশু, নারী ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের কাছেও। তিনি কুমারী মা ও শিশুটিকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের লোকেরা চাইছেন শিশুটিকে সরকারি হোমে রাখা হোক। কিন্তু মাকে ছাড়া শুধু শিশুটিকে রাখা সম্ভব নয়। তা ছাড়া মা শিশুটিকে ছাড়তে চাইবেন কি না সেটাও তো দেখতে হবে। যাই হোক, সব দিক বিবেচনা করে ওদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখছি। এ ছাড়া ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যাতে পার না পায়, সে জন্য জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতে মালতিপুর হাসপাতালে শিশু সন্তানের জন্ম দেন রেখা পারভিন (২০) নামে ওই কুমারী মা। গোয়ালপাড়ার দিনমজুর নৈমুদ্দিন শেখ ও আখতারা বিবির ৩ মেয়ের মধ্যে ওই তরুণী মেজ। বড় মেয়ে নূরনেহার বিবাহিত। বাকি দুই মেয়ের বিয়ে হয়নি। হাসপাতালে ভর্তির বৃহস্পতিবার রাত ৭টা নাগাদ পুত্র সন্তান প্রসব হয় রেখার। এর পরেই তাঁর মা আখতারা বিবি সদ্যোজাতকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন বলে চাউর হয়ে যায়। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিমলকৃষ্ণ রায় বলেন, “এক স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে ঘটনার কথা জানতে পেরে পুলিশকে সব জানাই। শিশুটির মুখে কাপড় গুঁজে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে বলে তিনি আমাকে বলেন।” চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, “সন্তান-সহ ওই কুমারী মা বাড়ির লোকের কাছে নিরাপদ নন বলে মন্ত্রীকে জানাই। অঘটন ঘটলে বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মা ও শিশু যাতে নিরাপদ আশ্রয় পায় তা স্বাস্থ্য দফতরকেও দেখতে অনুরোধ করেছি।” সদ্যোজাতকে বাড়ির লোক মেরে ফেলার চেষ্টা করছে, এ অভিযোগ মানতে চাননি রেখার মা আখতারা বিবি। তিনি বলেন, “সমাজে মুখ দেখানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা বলে নাতিকে মারার চেষ্টা কেউ করবে কেন? ওর কি দোষ!” রেখার দিদি নূরনেহার বিবি জানান, তাঁর বোন ও সদ্যোজাত সরকারি কোনও হোমে আশ্রয় পেলে তাঁরাও নিশ্চিন্ত হবেন। |