|
|
|
|
|
রং, দেওয়াল, খামখা খেয়াল |
পুজোটা বেশ হই হই করে কেটে গেল, তা বলে কি পোস্ট-বিসর্জন ডিপ্রেশন-এ ভুগবেন?
মনের রং দেওয়ালে ছিটকে এসে লাগুক না। একটা রঙিন মেকওভার। হবে? পৌলমী দাস চট্টোপাধ্যায় |
শীত শুরুতে বর্ষার ছোপ ধরা, চটা ওঠা চাকচিক্যহীন দেওয়াল একদম মানায় না। ওয়ালপেপার, ছবি দিয়ে খুঁত আর কত ঢাকবেন? এ দিক-ও দিক থেকে ঠিকই তারা উঁকি দিয়ে নিজের অস্তিত্বকে জানান দিয়ে যাবে। তার চেয়ে বরং গোটা বাড়িটাকেই রং করিয়ে নিন। দেখবেন, শীতের কমলা রোদের মধ্যে কেমন এক গাল হাসি মেখে দাঁড়িয়ে থাকবে আপনার সাধের বাড়িখানা।
|
রং করার খুঁটিনাটি |
রং করতে হলে চুক্তির ভিত্তিতেই এগোনোই ভাল। এতে ঝক্কি অনেক কম থাকে। সাধারণত যে কোম্পানিকে রং করার দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁরাএসে বাড়ি নতুন না পুরনো, কোথাও ড্যাম্প আছে কি না, কতটা জায়গায় রং করতে হবে এই সব দেখে মাপ নিয়ে নেয়। এর ওপর প্রতি স্কোয়্যার ফুট অনুযায়ী লেবার চার্জ সহ খরচের একটা আনুমানিক হিসেব ধরিয়ে দেবে।
ভাল কোম্পানিকে দিয়ে ঘর রং করানোর সুবিধে হল এরা রংয়ের ব্যাপারে বেশ কয়েক বছরের ওয়ারেন্টি দেয়। এর মধ্যে রং নষ্ট হয়ে গেলে সারানোর দায়িত্ব থাকবে কোম্পানির। রং বাছার আগে শেড কার্ড দেখে রং নির্বাচনের দায়িত্ব আপনার।
তবে আগে দেওয়ালের একটুখানি জায়গায় লাগিয়ে দেখে নেবেন। কারণ অনেক সময়েই শেড কার্ডের সঙ্গে দেওয়ালের রঙের কিছুটা তফাত থাকে।
|
রঙের রকমফের |
আগে থেকেই এই রং ভাল, এই রং খারাপ এটা ধরে বসে থাকবেন না। প্রত্যেক রঙের একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। কিন্তু রং পছন্দ করার সময় কিছু বিষয়কে অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। বার্জার পেন্টস-এর পক্ষ থেকে সুব্রত সিদ্ধান্ত জানালেন, ঘরে কতটা আলো ঢোকে, ফার্নিচার কী কী রয়েছে, এবং ঘরের বাসিন্দা কারা এর ওপর নির্ভর করে সেই ঘরে কী রং লাগানো যেতে পারে। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে এক ষাটোর্ধ দম্পতির ঘরের রং নববিবাহিতদের থেকে আলাদা হবে। আবার বেশ বড়সড় ছড়ানো ঘরে উজ্জ্বল রং লাগালেও সেটা মনে খুব বেশি প্রভাব ফেলে না। কিন্তু ছোট্ট ফ্ল্যাটে বেশি চড়া রং মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে মোটেই ভাল নয় বলে সুব্রত জানালেন। ঘরের যেকোনও একটা দেওয়াল হাইলাইট তো ওখন মোটামুটি সবাই করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে খুব বেশি কনট্রাস্ট-এর দিকে না যাওয়াই ভাল। অন্যান্য দেওয়ালগুলোর রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটু গাঢ় রং দিয়ে হাইলাইট করলে দেখতেও ভাল লাগে, আবার চোখের পক্ষেও তা আরামদায়ক হবে। টেক্সচারড ওয়াল তো বেশ কিছু দিনধরেই জনপ্রিয়। অনেক রকমের টেক্সচার পেন্টিং হয়। সাধারণতদেওয়ালের কোনও সমতল জায়গা বেছে নিয়ে তার ওপর গ্র্যানিউলস আর পেন্ট মিশিয়ে একটা লুক দেওয়া হয়। এ ছাড়াওব্লক, স্প্রে বা আঁচড়ের দাগের মতো লুকও দেওয়া যায়। কিন্তু টেক্সচারড ওয়ালকে এখন অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছে পেন্টেবল ওয়াল পেপার, জানালেন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার সমীরণ বণিক। এই ধরনের ওয়ালপেপার লাগিয়ে তার ওপর রিং, বক্স, জিওমেট্রিক মোটিফ যেমন খুশি ডিজাইন দেওয়া যায়। সমীরণ আরও জানালেন বাচ্চাদের ঘরে ওয়ালপেপার লাগানোই ভাল। চট করে পরিষ্কারও করা যাবে, আবার পছন্দ না হলে খুলে ফেলে রং করিয়ে নেওয়াও যাবে।
|
ডিজাইনার ওয়াল |
ওয়াল ফ্যাশনের ধারণা এখন ভীষণ ভাবে জনপ্রিয় হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত পেন্টিংয়ের ওপর নানা ধরনের মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়। বিশেষ করে খুদেদের ঘরে এক আজব দুনিয়া তৈরি করতে ওয়াল ফ্যাশনের জুড়ি নেই। এক দিকের দেওয়াল বরাবর সান্টা, বাটারফ্লাই, পরি, স্পাইডারম্যান-এর মতো ফিগার দিয়ে সাজিয়ে তোলা যায় এদের পুঁচকে দুনিয়া। চাইলে আস্ত একখানা রূপকথার বইও তুলে আনতে পারেন চার দেওয়াল জুড়ে। তা ছাড়া তার আজব চিন্তাগুলো যাতে দেওয়ালে মনের আনন্দে এঁকে ফেলতে পারে এ জন্য চকবোর্ড পেন্টিং বাজারে এনেছে এশিয়ান পেন্টস। |
|
এতে দেওয়াল নষ্ট হওয়ারও বিন্দুমাত্র ভয় থাকবে না। লিভিং রুম বা বেড রুমের দেওয়ালেও পছন্দ মতো ফ্লোরাল মোটিফ, সমান্তরাল বা উল্লম্ব চওড়া স্টাইপ, জ্যামিতিক প্যাটার্ন নানা ধরনের নক্শা ফুটিয়ে তোলা যায়। এশিয়ান পেন্টস-এর ওয়াল ফ্যাশনের মধ্যে প্রচুর বৈচিত্র পাবেন। হাল্কা উজ্জ্বল কোনও বেস কোটের ওপর এক দিকের দেওয়াল বরাবর ফুটিয়ে তুলতে পারেন প্রজাপতি, দিয়া, ফুল, ফ্রেম বা কোনও সুন্দর মেসেজ। |
|
|
|
|
|