|
|
|
|
যাতায়াতের সুষ্ঠু পরিষেবার দাবিতে রাস্তা অবরোধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাবরা |
সুষ্ঠু যান পরিষেবার দাবিতে শুক্রবার সকালে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা হাবরার কাশীপুর বটতলা বাজারে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। হাবরা-মগরা সড়কে ওই অবরোধের জেরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন বহু মানুষ। পুলিশ গিয়ে আজ, শনিবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে বলে জানিয়েছেন হাবরার আইসি প্রভাকর ভট্টাচার্য।
ওই সড়কে ডিএন-২১ এবং ডিএন-৩৬ রুটের ১৪টি বাস যাতায়াত করে। ৮টি বাস বাদুড়িয়ার বাগজোলা ও বারাসতের (৩৫ কিলোমিটার) মধ্যে চলাচল করে এবং ৬টি বাস হাবরা ও বাগজোলার (প্রায় ১৪ কিলোমিটার) মধ্যে চলাচল করে বলে বাস-মালিকেরা জানিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে দু’টি রুটে বাস চলাচল হঠাৎই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। যার জেরেই এ দিনের অবরোধ বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ দিন সকাল ৮টা থেকে কয়েকশো গ্রামবাসী সড়ক অবরোধ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, বাস চালানোর ব্যাপারে কোনও নিয়মকানুন মানা হয় না। কখনও এক ঘণ্টা, কখনও দু’ঘণ্টার ব্যবধানে বাস চলে। কোনও বাস বাগজোলা থেকে হাবরা পর্যন্ত, কোনও বাস আবার বাগজোলা থেকে বারাসত পর্যন্ত যায়। কিন্তু কোন বাস কখন কোথায় যাবে, তা আগে থেকে জানার কোনও উপায় নেই। এতে সমস্যা বাড়ে।
অবরোধকারীদের মধ্যে রঞ্জিত বিশ্বাস, ওয়াহাব মণ্ডল, ইব্রাহিম মণ্ডল প্রমুখের বক্তব্য, “বটতলা বাজার থেকে হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। ছাত্রছাত্রীরা বাসে-অটোতে বাদুড়ের মতো ঝুলে যাতায়াত করে। যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এখান থেকে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দূরত্বও প্রায় ১০ কিলোমিটার। আমরা চাই সুষ্ঠু যান পরিষেবা। আমরা বাস-অটো কোনও কিছুরই বিরুদ্ধে নই।”
মঙ্গলবার থেকে দু’টি রুটে হঠাৎ করে কেন বাস বন্ধ করে দেওয়া হল?
বাস-মালিকদের দাবি, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে মগরা ও হাবরার মধ্যে অটো চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথমে ৬টি অটো চললেও এখন তা অনেক বেড়ে গিয়েছে। বাস-মালিকদের পক্ষে সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “দফায় দফায় অটো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ৮টি অটো চালানো হবে। কিন্তু এখন চলছে ২০টি। ফলে, বাসের যাত্রী কমে গিয়েছে। আমরা অটোর বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই, ৮টি অটো চলুক আমাদের সঙ্গে সমঝোতা করে।” অবরোধকারীদের অভিযোগ উড়িয়ে গিয়ে সঞ্জয়বাবু দাবি করেন, “বাস নিয়ম এবং সময় মেনেই চালানো হচ্ছে। বাস চালানোর সঙ্গে যুক্ত প্রায় ১৫০ কর্মচারী। অটোর দাপট বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের রুটি-রুজিতে টান পড়ছে। তাঁরাই বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার থেকে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আমরা ওঁদের দাবির সঙ্গে একমত। কর্মীদের বাদ দিয়ে আমরা চলতে পারি না।”
এ ছাড়াও, বাস-মালিকেরা আরও কয়েকটি অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, বেহাল রাস্তার কারণে প্রতি ৬ মাস অন্তর একটি বাসের ৫টি করে টায়ার পাল্টাতে হয়। এ জন্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাস কেনা হয়েছে। কিন্তু আয় কমে যাওয়ায় কিস্তির টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।
অটো-চালকদের পক্ষে অনুপ নাগ, মিহির দত্ত বলেন, “আমরা ৮টি অটোই চালাচ্ছি। কিন্তু তাতে মানুষের যাতায়াতের সমস্যা মিটছে না। বাস ঠিকমতো পরিষেবা দিতে পারছে না। সময় মেনেও চলে না। কয়েকটি বাসের পারমিটও নেই। আশা করি, শনিবারের বৈঠকে সমস্যার সমাধান করা হবে।” |
|
|
|
|
|