নন্দীগ্রামের নিখোঁজ-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ধৃত প্রাক্তন সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য অজিত বরকে ৭ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠাল হলদিয়া মহকুমা আদালত। শুক্রবার ধৃতকে এজলাসে হাজির করা হলে এসিজেএম সর্বাণী মল্লিক চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দেন।
সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ পর্বে ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর সোনাচূড়া থেকে মহেশপুর পর্যন্ত ‘ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি’র মিছিল ছিল। মিছিল গোকুলনগর পৌঁছনোর পরই হামলা হয় এবং তার পর থেকে ভূমি-কমিটির ৭জন নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তদন্তে নেমে সিআইডি অফিসারেরা খেজুরির নিজকসবা পঞ্চায়েত এলাকার কয়েক জন মাঝিকে জেরা করেন। আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেন তিন মাঝি। তার পরই বৃহস্পতিবার বিকেলে খেজুরি ২ ব্লকের নিজকসবা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সিপিএম সদস্য অজিত বরকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর নিজেরও ভুটভুটি রয়েছে। তদন্তের পরে সিআইডি-র অনুমান, সেই ভুটভুটিতে চাপিয়েই ভূমি-কমিটির দেহগুলি বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। |
শুক্রবার বেলা ১২টা নাগাদ সিআইডি-র ঘেরাটোপে হলদিয়া মহকুমা আদালতে নিয়ে আসা হয় অজিতকে। দুপুর ২টো নাগাদ এজলাসে হাজির করা হয় তাঁকে। অভিযুক্তের পক্ষে আদালতে এ দিন কোনও আইনজীবী ছিলেন না। সরকারি আইনজীবী পূর্ণেন্দুশেখর কোদাল আদালতে জানান, অজিতকে জেরা করলে নিখোঁজদের সম্পর্কে তথ্য ও অন্য অভিযুক্তদের হদিস মিলবে বলে মনে করছে সিআইডি। তাই ধৃতকে অন্তত ১০ দিন সিআইডি হেফাজতে রাখার আবেদন জানানো হয়। বিচারক ৭ দিনের সিআইডি হেফাজত মঞ্জুর করেন। ১১ নভেম্বর ফের অজিতকে আদালতে হাজির করা হবে। সরকারি আইনজীবী জানান, ধৃতের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারা সংযোজিত হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে অজিত বরকে কলকাতার ভবানী ভবনে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে জেরা করে ওই ঘটনার পিছনে তমলুক ও হলদিয়ার আর কোন কোন নেতা জড়িত ছিলেন, তার জানতে চায় সিআইডি। আগামী কয়েক দিন ধৃতকে নিয়ে নন্দীগ্রাম ও খেজুরির বেশ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালাতে চায় সিআইডি। সে দিনের ঘটনাক্রম বুঝতে ধৃতকে নিয়ে ঘটনাস্থলেও যাওয়া হবে। পাশাপাশি, সিপিএমের নন্দীগ্রাম ‘পুনর্দখল’ পর্বে ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর কী ভাবে অপারেশন চালানো হয়েছিল তা দেখতে চাইছে সিআইডি। কেননা, সেদিন রাতে এগরা থেকে নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের তিন আহত-সহ সিপিএমের দুই নেতা তপন ঘোষ ও সুকুর আলি গ্রেফতার হন। নিখোঁজ-কাণ্ডের তদন্তে নেমে অজিত বরের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে সিআইডি। তিনি কয়েক জন সিপিএম নেতার নাম করেছেন বলে দাবি সিআইডি সূত্রের। |