|
|
|
|
মেদিনীপুরে ‘থ্রি ইডিয়টস’, উধাও নকল ছাত্র |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
কলেজের কৃতী ছাত্র। বন্ধু মহলেও মধ্যমণি। কিন্তু কলেজ-পর্ব মিটতেই সেই ছেলে বেপাত্তা। বন্ধুরা বহু খুঁজেও তাকে পায় না। প্রেমিকা হন্যে। শেষে জানা গেল, এত দিন রণছোড়দাস চাঁচোড় নামে যে সকলের মন জুড়ে ছিল, তার আসল নাম ফুংশুক ওয়াংড়ু!
চেতন ভগতের বই থেকে আমির খানের ‘থ্রি ইডিয়টস্’, র্যাঞ্চোর গল্পটা প্রায় সকলেরই চেনা। তবে এ বার আর গল্প নয়, প্রায় একই রকম একটা ঘটনা ঘটে গেল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। দেখা মিলল আস্ত এক ভুয়ো ছাত্রের। তবে সে কৃতী ছাত্র নয়। বন্ধুমহলেও ততটা জনপ্রিয় ছিল না।
অল ইন্ডিয়া জয়েন্টে ‘সফল’ হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রভাত কুমার। বাড়ি বিহারের পটনায়। গত ১ সেপ্টেম্বর তিনি কলেজে ভর্তি হন। তার পর থেকে যথারীতি ক্লাসও করেছেন। তবে, কলেজের নথিতে নামের পাশে থাকা ছবির সঙ্গে তাঁর কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবারই সেই গরমিল নজরে আসে। ছবি বাদে অন্য সব মার্কশিট, কাগজপত্র এত দিন আপাত ভাবে বিশ্বাসযোগ্যই ঠেকেছিল কতৃর্পক্ষের। বিষয়টি সামনে আসার পরে প্রভাত কুমার নামে ওই ‘ভুয়ো ছাত্র’টি হস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি লিখিত ভাবে পুলিশে জানিয়েছেন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি বলেন, “পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখার সময়েই গরমিল ধরা পড়ে। দেখা যায়, প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রটির সঙ্গে কলেজের নথিতে থাকা ছাত্রের ছবির কোনও মিলই নেই।”
ক’দিন আগে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নমুনা পরিচয়পত্র তৈরি হয়েছে। চূড়ান্ত পরিচয়পত্র তৈরির আগে ওই নমুনা ছাত্রছাত্রীদের দেখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলার সময়েই ‘ভুয়ো’ ছাত্রটির খোঁজ মেলে। এ দিন দুপুরে কলেজের স্টুডেন্ট-সেকশনে আসেন প্রভাত। সেকশনে তখন ছিলেন জয়ন্ত সাহা নামে কলেজের এক কর্মী। ওই ছাত্রকে দেখে জয়ন্তবাবুর সন্দেহ হয়। দেখেন, পরিচয়পত্রে যে ছবি রয়েছে তার সঙ্গে ছাত্রের মুখের মিল নেই। এর পর গোপনে বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষকে জানান ওই কর্মী। প্রভাতকে তলব করেন অধ্যক্ষ। কর্তৃপক্ষের দাবি, এই সময়ে চাপের মুখে ভেঙে পড়েন ওই ভুয়ো ছাত্র। জানান, কলেজের নথিতে যে ছবি রয়েছে সেটি তাঁর নয়। মনোজ কুমার নামে অন্য এক জনের। তবে, মনোজ কোথায় থাকেন, তা তাঁর জানা নেই। কিছুক্ষণ পরেই একটা অজুহাত তুলে হস্টেলে যেতে চান ওই তরুণ। অধ্যক্ষের ঘর থেকে তাঁকে বেরোনোর অনুমতিও দেওয়া হয়। তার পর থেকেই আর তাঁর খোঁজ নেই। বয়েজ হস্টেলের ৪০৮ নম্বর ঘরে থাকতেন প্রভাত। সেই ঘরটি এখন ফাঁকাই।
কলেজ কর্তৃপক্ষের ধারণা, প্রভাত নন, অল ইন্ডিয়া জয়েন্ট দিয়েছিলেন মনোজ নামে এক জন। যাঁর ছবিই রয়েছে কলেজের নথিতে। কিন্তু কলেজের ছাত্ররা জানিয়েছেন, যাঁর ছবি নথিতে রয়েছে তাঁকে কেউ চেনেন না। প্রভাতই এত দিন ক্লাস করেছেন। হস্টেলে থেকেছেন। সব মিলিয়ে বিভ্রান্তি। |
|
|
|
|
|