|
|
|
|
বিধায়কের উন্নয়ন তহবিল |
বরাদ্দ পড়ে, জমা পড়েনি খসড়া প্রকল্পই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
নিজ-নিজ এলাকায় উন্নয়নমূলক নানা কাজের জন্য পৃথক তহবিল রয়েছে প্রত্যেক বিধায়কের নামে। সেখানে বরাদ্দ টাকা দিয়েই বিধায়ক তাঁর নিজের নির্বাচনী এলাকায় নানা কাজ করে থাকেন। সেই তহবিলে বরাদ্দ অর্থ এসে পড়ে রয়েছে। অথচ খসড়া প্রকল্পই জমা দেননি অধিকাংশ বিধায়ক। এই চিত্র পশ্চিম মেদিনীপুরের। সময়মতো পরিকল্পনা বা প্রকল্প-রিপোর্ট জমা না পড়লে বরাদ্দ টাকা ফেরত চলে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এমনিতেই ‘পিছিয়ে পড়া জেলা’ হিসেবে চিহ্নিত পশ্চিম মেদিনীপুরা। বিধায়ক তহবিলের টাকা পড়ে থাকায় জেলা জুড়ে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রকল্প জমা দেওয়ার জন্য দু’-দু’বার বিধায়কদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রথম বার চিঠি পেয়ে কেউই সাড়া দেননি। পরিস্থিতি দেখে ফের চিঠি পাঠানো হয়। তার পর কয়েক জন বিধায়ক তড়িঘড়ি প্রকল্প জমা দিয়েছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম সবাই গড়িমসির একই সারিতে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “প্রকল্প জমা দেওয়ার জন্য মাস খানেক আগেই বিধায়কদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। আর ক’দিন পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”
সবে পাঁচ মাস হল রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে নতুন সরকার। সরকারের আর্থিক সঙ্কটও রয়েছে। কিন্তু বিধায়ক তহবিলের টাকা যথাসময়েই বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। নিজ-নিজ এলাকায় উন্নয়নের জন্য বিধায়কেরা এখন বছরে ৬০ লক্ষ টাকা করে পান। চলতি আর্থিক বছরের জন্য ইতিমধ্যেই প্রথম দফায় এই তহবিলে ৩০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। নিয়মমতো প্রথমে বিধায়কেরাই জেলা প্রশাসনের কাছে খসড়া প্রকল্প জমা দেন। পরে তা খতিয়ে দেখে বিডিওদের কাছে পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট কাজ করতে কত অর্থ লাগবে, কত দিনে কাজ শেষ হবে-এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরই সব দিক খতিয়ে দেখে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে সবুজ সঙ্কেত দেয়। সেই মতো নতুন সরকারের আমলে উন্নয়ন তহবিলে অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পর জেলা প্রশাসন থেকে বিধায়কদের প্রকল্প জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। জানানো হয়েছিল, অর্ধেক টাকা বরাদ্দ হলেও বিধায়করা যেন পুরো এক বছরের প্রকল্পই জমা দেন। কিন্তু একাংশ বিধায়ক আবার বরাদ্দ অর্ধেক অর্থের অনুপাতেই প্রকল্প জমা দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, শালবনি, ডেবরা-সহ কয়েকটি এলাকার বিধায়কেরা ইতিমধ্যেই প্রকল্প জমা দিয়েছেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কই এখনও খসড়া প্রকল্প জমা দেননি। খড়্গপুরের সিপিএম বিধায়ক নাজমুল হক-সহ কয়েক জন আবার ৩০ লক্ষ টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছেন। নাজমুল বলেন, “শীঘ্রই বাকি টাকার জন্য প্রকল্প জমা দেব।” মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক মৃগেন মাইতিরও বক্তব্য, “দু’-এক দিনের মধ্যেই প্রকল্প জমা দিয়ে দেব।”
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? জেলা প্রশাসনের একাংশের ব্যাখ্যা, এ বার জেলার অনেক বিধায়কই নতুন। এই প্রথম ভোটে জিতেছেন। স্বভাবতই প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পর্কে তাঁদের স্বচ্ছ ধারণা নেই। এক প্রশাসনিক আধিকারিকের কথায়, “নতুন বিধায়কদের কাজ বুঝতে একটু সময় লাগবে। কাজ করতে করতে এক-দু’বছরের মধ্যেই তাঁদের ধারণা জন্মে যাবে। কী করণীয় বুঝতে আর অসুবিধা হবে না।” |
|
|
|
|
|