|
|
|
|
পুকুর খনন, ‘চেক ড্যাম’ তৈরির উদ্যোগ |
জল ধরো, জল ভরো নিয়ে আজ বৈঠকে মন্ত্রী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
প্রায় প্রতি বছরই পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষের কাজ মার খায় পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায়। কখনও চাষ শুরুই করা যায় না। কখনও আবার মাঠেই পচে যায় ফসল। সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র সেচ সম্প্রসারণে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন পুকুর খনন করা হবে, তৈরি করা হবে ‘চেক ড্যাম’। এই সংক্রান্ত পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ, শনিবার দুপুরে মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। থাকবেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠি-সহ জেলার সব বিধায়ক ও বিভাগীয় আধিকারিক। বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও এমন বৈঠক হবে। মন্ত্রী বলেন, “বৃষ্টির জল ধরে রাখতেই উদ্যোগ। জঙ্গলমহলে জুড়ে বেশ কিছু ‘চেক ড্যাম’ তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। যত শীঘ্র সম্ভব কাজ শুরু হবে।” পরিকল্পনা রূপায়িত হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার গ্রামবাসীরা উপকৃত হবেন বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসন। মন্ত্রীর কথায়, “পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। এ বার কাজ শুরু হবে। জলস্তর কমে যাচ্ছে। তাই আরও বেশি করে বৃষ্টির জল ধরে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।” প্রস্তাবিত প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জল ধরো, জল ভরো।’
জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় জলস্তর কমছে। স্বভাবতই বিভিন্ন মহল উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে চাষের কাজেও। ‘পিছিয়ে পড়া’ পশ্চিম মেদিনীপুরের অধিকাংশ মানুষই চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। তাই পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষের ক্ষতি হলে তার প্রভাব নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে না। অভিযোগ, বেহাল সেচ ব্যবস্থার জন্যই সঙ্কট। জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি আরও খারাপ। মাওবাদী প্রভাবিত ১১টি ব্লকে কৃষিজমি রয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে সেচ-সেবিত ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯ হেক্টর। অর্থাৎ, জঙ্গলমহলের অর্ধেক জমিতেই সেচের সুবিধা নেই।
রাজ্য জুড়ে ৫০ হাজার পুকুর খননের পরিকল্পনা করেছে জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর। আগামী বছর মার্চ মাসের মধ্যেই ১২ হাজার পুকুর কাটার কথা। জঙ্গলমহলে অবশ্য পুকুরের থেকে বেশি ‘চেক ড্যাম’ তৈরির বন্দোবস্ত হচ্ছে। এর ফলে বৃষ্টির জল উঁচু এলাকা থেকে গড়িয়ে এসে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় জমা হবে। বর্ষার পরও এই জল নানা কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। পরিকল্পনা খতিয়ে দেখতেই আজ মেদিনীপুরে এসে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মন্ত্রী। জঙ্গলমহলে কাজ করার ক্ষেত্রে নানা বাধা আসতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতাও চাওয়া হবে। |
|
|
|
|
|