|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
নবদিগন্ত |
উন্নয়নের পথে |
কাজল গুপ্ত |
পাঁচ বছর কাটলেও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পতালুকের পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ মিটল না।
এ বারেও রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। কোথাও আলোর সমস্যা, বর্ষার মরসুমে জমা জলের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের। তাঁদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, এই শিল্পতালুকের পরিকাঠামো নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী কোনও পরিকল্পনা না করে অস্থায়ী ব্যবস্থা করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। তাই পাঁচ নম্বর সেক্টরের দায়িত্বরত নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি এই এলাকার পরিকাঠামো নিয়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বিধাননগরের পাঁচ নম্বর সেক্টরে রাস্তা থেকে নিকাশি সমেত পরিকাঠামো ঢেলে সাজা হচ্ছে। সম্প্রতি নবদিগন্তের বোর্ড মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৪৩২ একর আয়তনের পাঁচ নম্বর সেক্টরে রাস্তা মাত্র ১০-১২ কিলোমিটার। কিন্তু গাড়ির চাপ প্রতি দিন বাড়ছে। সেই চাপ নেওয়ার মতো ক্ষমতা না থাকায় রাস্তা খারাপ হয়। পাশাপাশি, যথাযথ নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষার মরসুমে জল জমে রাস্তার অবস্থা আরও বেহাল হয়ে পড়েছিল। রাস্তা মেরামতির কাজে যুক্ত কর্মীরাও সে কথাই বলেছেন। |
|
পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি দায়িত্ব নিয়েই রাস্তা মেরামতির কাজে হাত দেয়। তখনই তারা জানিয়েছিল, একই সঙ্গে নিকাশি ও রাস্তার উন্নয়নের কাজ না করলে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।
তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী থেকে এই শিল্পতালুকের নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুক প্রশাসন। যেমন, আইটি কর্মী সবুজ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “ফি বছর রাস্তা ভাঙছে, মেরামতি হচ্ছে, ফের ভাঙছে। বর্ষায় জল জমলেও তা সরাবার ব্যবস্থা নেই।”
এই সব সমস্যা মেটাতে এর আগেও নবদিগন্ত বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তার কিছুটা বাস্তবায়িত হয়েছিল, কিন্তু পরিকাঠামোগত সমস্যা থেকেই যায়। সে সব অভিজ্ঞতার নিরিখে এ বার বিশেষ পরিকল্পনা করে নবদিগন্ত। সংস্থার চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস থেকে শুরু হওয়া রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়েতে পাঁচ নম্বর সেক্টর অংশে ম্যাস্টিক অ্যাসফল্টের রাস্তা তৈরি হবে, খরচ হবে প্রায় দশ কোটি টাকা। পাশাপাশি, ৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই শিল্পতালুকের অভ্যন্তরের ছ’টি রাস্তার ধারে বিদ্যুদয়ন ও ফুটপাথ তৈরির কাজ করা হবে। |
|
নিকাশি নিয়ে নগরোন্নয়ন দফতরের বিশেষ ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের সহযোগিতায় একটি সমীক্ষাও চালায় নবদিগন্ত। ওয়েবেল এলাকায় নতুন পাইপলাইন ও পুরনো পাইপলাইনের সংস্কারের পাশাপাশি ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের সংস্কারও জরুরি বলে ওই সমীক্ষাতে উঠে আসে। তাই নিকাশি নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছে নবদিগন্ত। সে ক্ষেত্রে নতুন পাইপলাইন বসাতে সাড়ে পাঁচ কোটি ও পুরনো পাইপলাইনের সংস্কারে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। পাশাপাশি, পাঁচ কোটি টাকা ব্যয় করে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেলের সংস্কারের কাজ করা হবে বলে জানায় নবদিগন্ত।
তথ্যপ্রযুক্তির কর্মীদের কথায়, এই শিল্পতালুকে কর্মিসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গাড়িও। কিন্তু পরিকাঠামো দূর্বল বলেই রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। নিকাশিও তথৈবচ। পাঁঁচ বছর হল, অথচ স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা হল না। অভিযোগের জবাবে নবদিগন্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অথরিটির এগ্জিকিউটিভ অফিসার বদ্রীনারায়ণ কর বলেন, “নিকাশি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে কাজ শেষ করতে কিছু দিন সময় লাগবে। তাই নিকাশির উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনাও কার্যকর করা হবে।”
তবে, শুধু রাস্তা কিংবা নিকাশিই নয়, সম্পত্তিকর আদায়েও বিশেষ ব্যবস্থা নিতে চলেছে নবদিগন্ত। ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতিতে সম্পত্তিকর আদায় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করবে নবদিগন্ত। পাশাপাশি ই-গভর্নেন্স ব্যবস্থাও চালু করা হবে।
|
ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ |
|
|
|
|
|