|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
বেআইনি অটো |
অবাধ নৈরাজ্য |
নিজস্ব প্রতিনিধি |
আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজারহাট-সহ সংলগ্ন গ্রামীণ এলাকায় প্রশাসনের নাকের ডগায় রমরমিয়ে চলছে অবৈধ অটো। ডিজেলচালিত এই অটোগুলির কোনও কাগজপত্র না থাকায় যাত্রীদের দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা পাওয়াও সম্ভব নয়। অথচ এই অবৈধ অটোর চলাচল বন্ধ করতে পরিবহণ দফতরের কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে দেখা যায় না স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকেও। এই প্রশাসনিক গাফিলতির সুযোগ নিয়ে কিছু অটো ভুয়ো নম্বর প্লেট লাগিয়ে চলছে বলেও অভিযোগ।
রাজারহাট থানা বাসস্টপ থেকে পাথরঘাটা পর্যন্ত ২১১ নম্বর রুটের বাসের পাশাপাশি চলছে বেশ কিছু ডিজেলচালিত অটো। এ ধরনের আরও অটো চলছে রাজারহাট থানারই লাউহাটি থেকে হাড়োয়া ও ভাঙড় অভিমুখে। ওই সব এলাকায় ৯১ নম্বর বাসের বিকল্প হিসাবেই চালু রয়েছে
ডিজেল-চালিত অটো। দৈনিক বেশ কয়েকশো যাত্রী এই সব অটোয়
যাতায়াত করেন। |
|
ডিজেলচালিত এই অটোগুলিতে অন্যান্য গাড়ির মতো ‘ব্লু বুক’ থাকে না। তাই দুর্ঘটনা ঘটালে বা আইন লঙ্ঘন করলে এই সব অটোর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায় না। পরিবহণ দফতরের কাছে এ ধরনের অটোর কোনও নথি নেই। কারণ ডিজেলচালিত অটোর নিবন্ধীকরণ হয় না। তাই ওই অটোগুলির কোনও নম্বরও থাকে না। ডিজেলচালিত এই সব অটো চলছে কার্যত ভ্যানরিকশার মতোই। তেল খরচ বাদে কোনও দায়বদ্ধতা নেই মালিকের। এ সব কারণেই পরিবহণ আইন অনুযায়ী এই অটোগুলিকে ‘অবৈধ অটো’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
তা হলে কী ভাবে দিনের পর দিন চলছে এই ধরনের অটো?
সিটু সমর্থিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা অটো অপারেটর্স ইউনিয়নের সম্পাদক অসীম দত্ত বলেন, “জেলা জুড়ে কোথাও ডিজেল অটো চালানোর সরকারি অনুমতি নেই। প্রশাসনিক গাফিলতির সুযোগ নিয়ে অটোগুলি চলছে। ইচ্ছেমতো ভুয়ো নম্বরপ্লেট লাগাচ্ছে। প্রশাসনকে জানিয়েও কিছু হয়নি।” আইএনটিটিইউসি নিয়ন্ত্রিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলা অটো আপারেটর্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি তাপস দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, “ডিজেল অটোর ব্যাপারে জেলাশাসক এবং আরটিও-কে বলেছি, হয় ডিজেল অটোর শো-রুম বন্ধ করে দেওয়া হোক, না হলে অটোগুলিকে বৈধ করে চালানোর অনুমতি দেওয়া হোক। বহু মানুষ এই অটো পরিষেবার উপর নানা ভাবে নির্ভরশীল।” |
|
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অসংখ্য অবৈধ অটো চলছে রাজারহাট সমেত জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে। বাস-ট্যাক্সি-রিকশার বিকল্প হিসাবে এই অটোগুলিতে প্রচুর যাত্রীও ওঠেন। সচেতনতার অভাবে গ্রামীণ এলাকার অসংখ্য মানুষ এই সব অটোর পরিষেবা নিতে কার্যত বাধ্য হচ্ছেন বলে বাসিন্দাদের অভিমত। রাজারহাটের বাসিন্দা সফিকুল ইসলামের কথায়: “এই অটোর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি মৃতের পরিবার, এমন ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ কেন অটোগুলি বন্ধ করে দিচ্ছে না? বৈধ হোক বা অবৈধ, অটো রাস্তায় নামলে তাতে যাত্রীরা উঠবেন। এতে যাত্রীদের দোষ কোথায়? রাস্তায় নামার পরে গাড়ির বৈধতা দেখার দায়িত্ব পুলিশ আর পরিবহণ দফতরের। তারাই তো কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোচালক বললেন, “আমরা প্রয়োজনীয় রাজস্ব দিয়ে বিমার সুবিধা পেতে রাজি আছি। সরকার আমাদের অটোগুলি বৈধ করুক।”
অবৈধ এই অটোগুলির বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) রণধীর কুমার বলেন, “বেশ কিছু অটো বাতিল করা হয়েছে। কোথাও কোথাও এখনও হানা দিয়ে অবৈধ অটো বন্ধ করা হচ্ছে। তবে কোথাও অবৈধ অটো চলছে খবর পেলে তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|