দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র দুর্গাপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনকে কুড়ি লক্ষ টাকা জরিমানা করল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। এ ছাড়াও কুড়ি লক্ষ টাকা ‘ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি’ জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক বছরের মধ্যে দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ওই টাকাও বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে। ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ জানান, জরিমানা ও ‘ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি’ ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে।
ষাটের দশকে দু’টি ৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল ডিটিপিএস। পরে ১৯৬৬ সালে একটি ১৪০ মেগাওয়াট এবং ১৯৮২ সালে ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন আরও দু’টি ইউনিট গড়ে ওঠে। |
কলুষিত দামোদর। দুর্গাপুরের আশিসনগর এলাকায় ছবিটি তুলেছেন বিশ্বনাথ মশান। |
১৯৮৫ সালে আগুন লেগে প্রথম দু’টি ইউনিট বসে যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই ডিটিপিএসের বিরুদ্ধে এলাকায় দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। একাধিক বার দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু দূষণ রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ। জল, বায়ু এবং ‘ফ্লাই অ্যাশ ম্যানেজমেন্ট’- এই তিন বিভাগেই মাত্রাতিরিক্ত দূষণ হওয়ায় পরিবেশ ভবনে সম্প্রতি শুনানিতে ডাকা হয় ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষকে। শুনানিতে কর্তৃপক্ষের উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্য সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা ডিপিএলের বিরুদ্ধে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আর্থিক জরিমানাও করা হয়। এমনকী ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ডিপিএলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পর্ষদ। সংস্থার ৫ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আদালত সমন পাঠায়। তবে তার পরে ডিপিএলের তরফে দূষণ রোধে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। এ বার জরিমানা করা হল কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ডিভিসি-র তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ডিটিপিএস-কে। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, অবিলম্বে দূষণ রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষকে। তা না হলে ‘ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি’ বাবদ জমা দেওয়া অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়েছেন পর্ষদের দুর্গাপুরের পরিবেশ বাস্তুকার সুদীপ ভট্টাচার্য।
ডিটিপিএস কর্তৃপক্ষ জানান, ইতিমধ্যেই জরিমানা ও ‘ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি’র অর্থ যথাস্থানে জমা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্থার মুখ্য বাস্তুকার প্রবীর সেনরায় দুর্গাপুরের বাইরে থাকায় এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি সহকারী মুখ্য বাস্তুকার অর্ধেন্দু ঘোষের সঙ্গেও। তবে সংস্থার এক আধিকারিক জানান, দূষণ রোধে ধাপে ধাপে এগোবে সংস্থা। |