মাত্র ১৫টি গাছ! তার জন্যই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগের সম্প্রসারণের কাজে গতি আসছে না। আবার শুরু করা যাচ্ছে না ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ নির্মাণের কাজও। পূর্ত দফতরের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী না হওয়াতেই সমস্যা মিটছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আঙুল তুলছেন পূর্ত দফতরের দিকে। তাঁদের দাবি, বন দফতর কোন কোন গাছ কাটা যাবে তা চিহ্নিত করার পরেও গাছ কাটতে উদ্যোগী হচ্ছে না পূর্ত দফতর।
বছর খানেক আগে স্বাস্থ্য দফতর দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়। বহির্বিভাগে রোগীর চাপ বেশি। কিন্তু জায়গা অপ্রতুল। হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেন চিকিৎসকেরা। রোগী ও রোগীর পরিজনদের চাপে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটে। তাই বহির্বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট ভবনটির উপরে আরও একটি তলা বাড়িয়ে পুরো বহিবির্ভাগটিকেই ওই বাড়িতে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য দফতর বরাদ্দ করে ৬২ লক্ষ টাকা। মাস দু’য়েক আগে সেই কাজ শুরু করে পূর্ত দফতর। কিন্তু ভবনটির লাগোয়া কয়েকটি গাছের জন্য কাজের অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ পূর্ত দফতরের। |
অন্য দিকে, হাসপাতালের মূল ভবনের পাশে নতুন একটি ভবন তৈরি করে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বেশ কয়েক মাস আগে। তার জন্য স্বাস্থ্য দফতর বরাদ্দ করে ৭৫ লক্ষ টাকা। বিধানসভা নির্বাচনের কারণে টেন্ডার ডাকতে দেরি হয়। শেষ পর্যন্ত ১০ অক্টোবর টেন্ডার চূড়ান্ত হয়। কিন্তু পূর্ত দফতরের অভিযোগ, যেখানে নির্মাণ কাজ করার কথা, সেখানে বেশ কয়েকটি গাছ রয়েছে। সেই গাছ না কাটা হলে নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে না। গাছগুলির মালিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাজেই সেগুলি কাটার জন্য তাঁদেরই উদ্যোগী হতে হবে। হাসপাতালের রোগী ও পরিজনদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক অতীতে যে ভাবে জেলা ও কলকাতার হাসপাতালে এক সঙ্গে বহু শিশুর মৃত্যু হচ্ছে তাতে ‘সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট’ মহকুমা হাসপাতালে গড়ে তোলা খুবই জরুরি। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ হওয়া, টেন্ডার ডাকার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও সিক নিউ বর্ন কেয়ার ইউনিট ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
পূর্ত দফতরের আসানসোল ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার মহম্মদ রাকিব বলেন, “গাছের জন্য সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার গাছ কেটে ফেলার আর্জি জানানো হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি নির্মাণ কাজের জন্য মোট ১৫টি গাছ কেটে ফেলতে হবে। বন দফতর গাছগুলি চিহ্নিত করে গিয়েছে। এখন গাছ কাটার দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস বলেন, “দ্রুত যাতে নির্মাণ কাজ করা যায় সেই জন্য আমি বন দফতরে তিন বার গিয়েছি। বন দফতর থেকে গাছগুলি চিহ্নিত করে দিয়ে গিয়েছে কাটার জন্য। পূর্ত দফতরকে সে কথা জানিয়েও দিয়েছি। কিন্তু পূর্ত দফতর গড়িমসি করছে।” খুব শীঘ্র নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি। |