খুঁটি বসেছে অনেক দিন হল। টানা হয়েছে তারও। কিন্তু বিদ্যুৎ আজও আসেনি গ্রামে। এরই প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন রানিবাঁধ ব্লকের দু’টি গ্রামের বাসিন্দারা। প্রথম দফায় পুলিশ লাঠি চালিয়ে অবরোধ তুলে দেয় বলে অভিযোগ তাঁদের। এর প্রতিবাদে ফের টানা তিন ঘণ্টা পথ অবরোধ করেন গ্রামের মহিলারা।
মঙ্গলবার রানিবাঁধ থানার মদনডি ও মোলচাড়র গ্রামের মাঝে, খাতড়া-রাইপুর (আকখুটা হয়ে) রাস্তায় ওই অবরোধ হয়। তার জেরে দীর্ঘক্ষণ ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৭টা থেকে খাতড়া-রাইপুর সড়কে অবরোধ শুরু করেছিলেন স্থানীয় হলুদকানালি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ভালুকাডুংরি ও মালবেড়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা। অবরোধে সামিল হয়েছেন ওই দুই গ্রামের মহিলারাও। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ রানিবাঁধ থানার আইসি অঞ্জন দে পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলা যায়নি। তখন পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। পুলিশ ফিরে যেতেই সকাল ৯টা থেকে ফের পথ অবরোধ শুরু করেন মহিলারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় অবরোধ তুলতে এসে নিরীহ মানুষকে পিটিয়েছে। লাঠিচার্জের অভিযোগ অস্বীকার করে এসডিপিও (খাতড়া) নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “ওই অবরোধের ফলে রাস্তায় যানজট হয়েছিল। তখন পুলিশ সেখানে গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়। লাঠি চালানো হয়নি।” |
ভালুকাডুংরি ও মালবেড়া গ্রামে শ’চারেক পরিবারের বাস। গ্রামবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই গ্রামে বিদ্যুৎ নেই। বছর দুয়েক আগে গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি বসেছে। মাস ছয়েক আগে খুঁটিতে তারও টানা হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। মালবেড়া গ্রামের বাসিন্দা গুরুচরণ মাহাতো বা ভালুকাডুংরির বাসিন্দা নির্মল মাহাতো, বিদ্যুৎ মাহাতোর ক্ষোভ, “এতদিন ধরে তার টানা থাকলেও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। অথচ আশপাশের সব গ্রামেই বিদ্যুতের আলো জ্বলছে। বঞ্চনার শিকার শুধু আমাদের এই দু’টো গ্রাম।” এলাকারই বাসিন্দা তথা হলুদকানালি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শান্তিপদ মাহাতোর অভিযোগ, “ওই দু’টি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুত দেওয়ার জন্য কিছুদিন আগে ব্লক প্রশাসন ও বিদ্যুৎ দফতরের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। তার পরেও কোনও কাজ হয়নি। প্রশাসনের উদাসীনতার জন্যই ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।”
রানিবাঁধের বিডিও তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুতের দাবিতে এর আগে আমার কাছে গণস্বাক্ষর করে আবেদন জানিয়েছেন। বিদ্যুৎ দফতরের প্রজেক্ট ম্যানেজারকে বিষয়টি জানিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। শীঘ্রই ওই গ্রামের বাসিন্দারা বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন।” বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেডের বাঁকুড়ার ডিভিশনাল ম্যানেজার সন্দীপ সাহানা বলেন, “পুজোর জন্য নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে দেরি হয়েছে। যে-সব এলাকায় লাইন টানা হয়ে গিয়েছে, সেখানে শীঘ্রই বিদ্যুৎ পৌঁছবে।” |