|
|
|
|
‘নিশানা’ নন চিদম্বরম, ফের ব্যাখ্যা প্রণবের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বিদেশ সফরের আগে ফের ঘাড়ে সওয়ার হল টু-জি ভূত। প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চিঠি প্রকাশিত হওয়ার পর গোটা কেলেঙ্কারিতে চিদম্বরমের ভূমিকার প্রসঙ্গ ফের এক বার সামনে চলে এল। স্বাভাবিক কারণেই চরম অস্বস্তিতে কংগ্রেস। এরই মধ্যে প্রণববাবু এ দিন মনমোহন সিংহ এবং সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেন। সঙ্গে সঙ্গেই চর্চা শুরু হয়ে যায় যে, টু-জি নোট বিতর্ক নিয়ে কথা বলার জন্যই এই সাক্ষাৎ। অর্থ মন্ত্রক থেকে অবশ্য বলা হয় যে সনিয়ার সঙ্গে প্রণববাবুর বৈঠক পূর্বনির্ধারিত ছিল। আর মনমোহনের বিদেশ সফরের আগে তাঁর সঙ্গে প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন প্রণববাবু।
অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর পাঠানো ‘নোট’-এ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, চিদম্বরম যদি নিলামের মাধ্যমে টু-জি স্পেকট্রামের লাইসেন্স বন্টন করতেন তবে এত বড় কেলেঙ্কারি হতেই পারত না। এই বিতর্কিত ‘নোট’ নিয়ে অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। জানিয়েছেন, তিনি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত পর্যায়ের চিঠি দিয়েছিলেন এবং তাতে চিদম্বরমকে সরাসরি দোষারোপ করে কিছুই লেখেননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও ক্যাবিনেট সচিবালয়ের মাধ্যমে ‘নোট’ যাওয়ায় সময়েই ওই চিঠিতে পরিবর্তন ঘটেছে। |
|
প্রণববাবুর বক্তব্য, নেহাতই ঘরোয়া ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি যা লিখেছিলেন তা সরকারি ‘নোট’ হিসেবে পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। শুধু তাই নয়, চিদম্বরম প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্যকেও তীক্ষ্ন করা হয়েছে। এ ভাবে ‘নোট’ পাঠানোর কথা ক্যাবিনেট সচিবালয়েরও অজানা ছিল না। সাধারণ চিঠিকে সরকারি ‘নোট’ হিসেবে সংরক্ষণ করার কারণেই তথ্য জানার অধিকার আইনে তা এক সময়ে প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক হয়ে পড়ে। প্রণববাবু জানিয়েছেন, ওই ‘নোট’ পাঠানোর ব্যাপারে তীব্র আপত্তি ছিল অর্থনীতি বিষয়ক দফতরের। কিন্তু তাতে কান দেওয়া হয়নি। কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরে যাওয়ার সময় প্রণববাবুর ‘নোট’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ বার তিনি জি-২০ বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার আগেও ফের মাথাচাড়া দিল সেই একই বিতর্ক। বিষয়টি তড়িঘড়ি ধামাচাপা দিতে ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেত্রী অম্বিকা সোনি বলেন, “অহেতুক নতুন করে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। বিষয়টা শেষ হয়ে গেছে এবং এ ব্যাপারে সরকারি তরফে ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আলোচনা অর্থহীন।” সুযোগ বুঝে ফের কংগ্রেস তথা ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ শুরু করেছে বিজেপি। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রসঙ্গে বর্তমান অর্থমন্ত্রীর বিরূপ মন্তব্যকে আক্রমণের হাতিয়ার করতে চাইছে তারা। দলের মুখপাত্র নির্মলা সীতারামন বলেন, “সরকার নিজেদের ঝগড়ায় ব্যস্ত। প্রশাসনের উপর কারও নজর নেই। মনমোহন সিংহ সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সরকারের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণই নেই। আর এই অবস্থার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে।”
বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “আমরা আগেও বলেছি টু-জি কাণ্ডে চিদম্বরম দোষী। এখন দেখা যাচ্ছে আমাদের কথা কতখানি সত্যি। কেলেঙ্কারির দায় স্বীকার করে চিদম্বরমের পদত্যাগ করা উচিত।” নির্মলা সীতারামন আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “টু-জি কাণ্ডে চিদম্বরম যে টাকা নয়ছয় করেছেন তার বড় অংশ কংগ্রেসের পকেটে ঢুকেছে। সে জন্যই কংগ্রেস চিদম্বরমকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লেগেছে।” |
|
|
|
|
|