রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদল হলেও সিপিএমের মতো দলতন্ত্রের রাস্তায় তৃণমূল কংগ্রেসও হাঁটছে বলে অভিযোগ করল ফরওয়ার্ড ব্লক। সোমবার দিনহাটায় জেলা ব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচির সূচনা হয়। সেখানে দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “আমরা ছোট দল। কম ভুল করেছিলাম। সিপিএম বড় দল বলে বেশি ভুল করেছিল। রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন এনেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস-কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দলতন্ত্র একই রয়েছে।” এই প্রসঙ্গেই দিনহাটা কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য মনোনয়নের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক বলেন, “সিপিএম তাদের শিবিরের শিক্ষকদের কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য করেছিল। তৃণমূলও করেছে। কিন্তু দিনহাটা কলেজে পরিচালন সমিতিতে তৃণমূলও তাই-ই করেছে।” দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ, ধান-পাট সহ কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য, সারের সমস্যা ঘোষণা, নিয়মিত বার্ধক্যভাতা, বিধবাভাতা, কৃষি পেনশন চালু সহ বিভিন্ন দাবিতে কোচবিহার জেলা জুড়ে আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক। সোমবার দিনহাটা মহকুমাশাসকের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ওই আন্দোলন শুরু হয়েছে। ওই দফতর চত্বরে বড় মাপের জমায়েতে বক্তব্য রাখেন উদয়ন গুহ। রাজ্যের নতুন সরকার গঠনের পর থেকে জেলা জুড়ে বামফ্রন্ট কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা, পার্টি অফিস বন্ধ করে দেবার অভিযোগ নিয়েও সরব হন তিনি। গ্রামগঞ্জে দরিদ্র ও কৃষকদের সমস্যা ঘোচাতেও কোনও তৎপরতা নেই বলে তার অভিযোগ। ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা সম্পাদকের কথায়, “ভোট প্রচারে তৃণমূলের অনেকে প্রচার করতেন অফিস কর্মী, শিক্ষকরা মাসে ৩০ হাজার টানা বেতন পান। অথচ গরিব মানুষেরা ৭০ টাকা কেজি দরে ডাল কিনতে বাধ্য হন। সেসব মানুষের পরিবর্তন হয়নি। বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতাও অমিল। পরিবর্তন বলতে শিক্ষকদের ১০ তারিখের বেতন ১ তারিখে হয়েছে মাত্র।” এ দিন ডিসেম্বর মাসে দিনহাটায় বার্ধক্য ভাতা, বিধবাভাতা, কৃষি পেনশন নিয়ে গড়িমসি কাটাতে মহিলা উপভোক্তাদের নিয়ে আন্দোলনের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। ফরওয়ার্ড সূত্রের খবর, সোমবারের মতো একই দাবিতে ৩ নভেম্বর মেখলিগঞ্জে, ৪ নভেম্বর কোচবিহার সদর ও মাথাভাঙায়, ৮ নভেম্বর তুফানগঞ্জে মহকুমাশাসকের দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ হবে। ১২ নভেম্বর কোচবিহারে কর্মীদের চাঙা করতে রবীন্দ্র ভবনে সভা ডাকা হয়েছে। এ দিন দিনহাটায় বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর, দীপঙ্কর সরকার, নৃপেন রায়, হীরালাল দাস প্রমুখ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা সম্পাদকের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ সিপিএম কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। সিপিএমের কোচবিহার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তী বলেন, “যে দফতর যে দলের হাতে থাকে, তার ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী নানা পরিচালন সমিতিতে তার প্রতিনিধি কে হবেন সেটা ঠিক করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে দলের লোকজনকেই মন্ত্রী মনোনীত করে থাকেন। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতারা নিজেদের দফতরে একই কাজ করেছেন। সে সময় তৃণমূল না বুঝে দলতন্ত্রের কথা বলত। এখন ফরওয়ার্ড ব্লক বলছে।” |