আগাম অবসর
গাফিলতিতে অভিযুক্ত আদালত কর্তৃপক্ষ
মেয়াদের নয় মাস আগেই মালদহ জেলা আদালতের এক সাফাই কর্মীকে অবসর দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সাফাই কর্মীর নাম মীনা দেবী। সোমবার চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল মালদহ আদালতের সাফাই কর্মী মীনা দেবীর। অভিযোগ, আদালতের কর্মীদের একাংশের গাফিলতিতে ৯ মাস আগেই গত ৩১ জানুয়ারি তাঁকে চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অ্যাকাউন্ট জেনারেল (এ অ্যান্ড ই) দফতর এই বিষয়টি নিয়ে চিঠি পাঠিয়ে মালদহ জেলা ও দায়রা জজকে জানানোর পরেই মালদহ আদালতের আইনজীবী মহল থেকে শুরু করে কমর্চারীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ওই সাফাই কর্মীকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুপারিশ করে জেলা ও দায়রা জজ রাজ্য সরকারের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে (জুডিশিয়াল) চিঠি পাঠিয়েছেন। এই ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ নির্মলকুমার ঘোষাল বলেন, “তিন মাস আগেও বিষয়টি নজরে আসলে ওই সাফাই কর্মীকে পুনরায় কাজে যোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেত। যখন বিষয়টি জানা গেল তখন আর কিছুই করা গেল না। সামান্য ভুলের জন্য ওই সাফাই কর্মীর যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ যাতে উনি পান তার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” সাফাই কর্মীর অবসর নিয়ে আদালতের কর্মীদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। যে সময় ওই সাফাই কর্মীকে অবসর দেওয়া হয়েছিল সেই সময়ে মালদহ আদালতের অ্যাকাউন্টস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী বলেন, “গোড়ায় গলদ ছিল। নাজিরখানা থেকে যে গ্রেডেশন লিষ্ট পেয়েছি তা দেখেই ওই সাফাই কর্মীর ৩১ জানুয়ারি অবসরের দিন ঠিক করা হয়। আমাদের কোনও দোষ নেই।” এই ব্যাপারে নাজির দফতরের কেউ মন্তব্য করতে চাননি। ওই দফতরের কর্মীদের বক্তব্য, একজন কর্মীকে ৫-৬ জনের কাজ করতে হচ্ছে। যে পরিমাণে কাজ সেই অনুপাতে কর্মী নেই।” জেলা ট্রেজারি আধিকারিক সুদীপ সিংহ বলেন, “এই ধরনের সমস্যার কোনও দিন মুখোমুখি হইনি।” এ দিকে চাকরির মেয়াদ বাকী থাকতেই তাঁকে অবসর দেওয়ায় ক্ষুব্ধ ওই সাফাই কর্মী ৯ মাসের বেতনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, রাজ্যপাল, রাজ্যের মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। মীনা দেবী অভিযোগ করেন, “গত ডিসেম্বর মাসে মালদহ আদালতের অ্যাকাউন্টস সেকশন থেকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি আমি অবসর নেব। ওই চিঠি পাওয়ার পরই আমি আদালতের অ্যাকাউন্টস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীকে বলেছিলাম ৩১ জানুয়ারি নয়, ৩১ অক্টোবর আমার অবসর। কেউ আমার কথা শোনেনি। আমার আপত্তি সত্বেও ৩১ জানুয়ারি আমার হাতে অবসরের চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়। যাদের গাফিলতিতে ৯ মাস আগে আমাকে চাকরি থেকে অবসর নিতে হয়েছে তাদের শাস্তি চাই। দোষীদের শাস্তি ও ৯ মাসের বেতনের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্ট, রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছি।” মালদহ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অসিত বসু বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যা ঘটেছে তা অত্যন্ত অন্যায়। যেভাবেই হোক ওই সাফাই কর্মীকে তাঁর ৯ মাসের বেতনে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। ফের যাতে আদালতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে ব্যপারে সতর্ক হওয়া উচিত। জেলা আদালত কমর্চারী ইউনিয়নের সহ সভাপতি মনোজ চৌধুরি বলেন, “যাদের গাফিলতিতে চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একজন সাফাই কর্মীকে ৯ মাস আগে অবসর করানো হয়েছে তাদের শনাক্ত করে শাস্তির জন্য জেলা দায়রা ও জজের কাছে দাবি জানাব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.