অজানা জীবাণুবাহিত যে জ্বর কলকাতা কাঁপাচ্ছে, তার আসল উৎস সন্ধানে আজ, মঙ্গলবার কলকাতায় আসছেন পুণের ‘ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’র চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। তাঁরা নিজেরা এ শহর থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। সম্ভব হলে রাজ্য সরকার ও পুরসভার ক্লিনিকে গিয়ে তাঁরা রোগীদের সঙ্গে কথাও বলবেন। কলকাতা শহরের এই নতুন জ্বর ভাবিয়ে তুলেছে পুণের ওই সংস্থার বিজ্ঞানী-গবেষকদেরও।
কলকাতা পুরসভার গবেষণাগারে এই জ্বরের উৎস ধরা পড়েনি। কলকাতার কোনও ক্লিনিকেই পাওয়া যায়নি কোনও জীবাণু। আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর রক্তের নমুনা কলকাতার ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’ থেকে পাঠানো হয়েছিল পুণের ওই গবেষণা সংস্থায়। সেখানকার বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিয়েছেন, জ্বরের উপসর্গ ডেঙ্গি বা চিকুনগুনিয়ার মতো হলেও তাঁদের কাছে পাঠানো কোনও নমুনাতেই ওই দুই রোগের জীবাণু মেলেনি। রোগ আসলে কী, তা জানতে সংস্থার বিজ্ঞানী বি পান্ডালের নেতৃত্বে চার জনের ওই দলটি আসছে শহরে।
সোমবার পুণে থেকে ওই গবেষণা সংস্থার পক্ষে আরান কাল্লে বলেন, “এই জ্বর চিকুনগুনিয়া বা ডেঙ্গি নয়। অন্য কিছু হতে পারে। আমরা বিজ্ঞানীদের কলকাতায় পাঠিয়ে নিজেরা রক্তের নমুনা সংগ্রহ করব। তাঁরা কথা বলবেন ‘স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন’, ‘ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেল্থ’ ও ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস’-এর গবেষকদের সঙ্গে। প্রয়োজনে কথা হবে শহরের কয়েক জন চিকিৎসকের সঙ্গেও।” তবে কলকাতার ওই জ্বর যে জীবাণুঘটিত, সে ব্যাপারে পুণের ওই সংস্থার বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত।
বেশ কিছু দিন ধরে কলকাতায় এই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। হঠাৎ করে জ্বর উঠে যাচ্ছে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। সঙ্গে গাঁটে ব্যথা। ত্বকে লালচে আভা। বাড়ির চিকিৎসক চটপট পাঠিয়ে দিচ্ছেন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে। কিন্তু কোনও রোগই ধরা পড়ছে না।
অন্য এক ধরনের জ্বরে সুস্থ হওয়ার কিছু দিন পরে ফের ঘুরে আসছে জ্বর। সঙ্গে গলাব্যথা। সারা শরীর জুড়ে থাকছে অস্বস্তি। প্রথম থেকেই জ্বর ঘোরাফেরা করছে ৯৯-১০০ ডিগ্রির মধ্যে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে রোগী বুঝতেই পারছেন না যে, তাঁর জ্বর হয়েছে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে শারীরিক ভাবে কাবু হয়ে পড়ছেন। জ্বর থাকছে দুই থেকে আড়াই সপ্তাহ। সাধারণ জ্বরের ট্যাবলেটে কোনও কাজ দিচ্ছে না। জ্বরের গতিপ্রকৃতি জানতে ইতিমধ্যেই স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা কৃষ্ণাংশু রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। |