শহরে ক্রমশ বাড়ছে বাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। অথচ ১৯৯৭ সাল থেকে ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ আদায়ের কাজ স্থিমিত হয়ে রয়েছে। এদিকে ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে আছে পুরসভা। পুরসভার উন্নয়নেও কোনও গতি নেই। সে সব চিন্তা করে এবারে ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ আদায়ে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে শিলিগুড়ি পুরসভা। সোমবার পুরসভার বোর্ড মিটিঙে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীরা। তার উত্তরে ওই কথা জানান পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক ভাবে ১৫ কোটি টাকা বকেয়া কর পড়ে রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ জানান। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় বন্ধ রয়েছে। এবারে আমরা প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে সমীক্ষার কাজে নেমেছি। তা দ্রুত শেষ করা হবে। পুরসভা ঋণে পড়ে রয়েছে। এগোতে পারছে না। এসবই হচ্ছে কর আদায় না হওয়ার জন্য। অন্তত ১৫ কোটি টাকা কর বকেয়া পড়ে রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।” এদিন বোর্ড মিটিঙে পুরসভার বিরোধী সিপিএম কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্ত হোল্ডিং নম্বর দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “বাম আমলে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তার সমস্ত নথিপত্র পুরসভায় রয়েছে। এবারে মেয়র যেভাবে সমীক্ষার কাজ করছেন তাতে আইনি সমস্যা তৈরি হবে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৭ সাল থেকে শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকায় ‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ আদায় বন্ধ রয়েছে। তার পরে অবশ্য শহরের আনাচে-কানাচে বাড়ি থেকে প্রচুর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। পুরসভা সূত্রেই খবর, প্রায় ১ লক্ষাধিক বাড়ি এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনও কর আদায় করা হয় না। অথচ তাঁদের সমস্ত রকম পরিষেবা পুরসভার পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। মেয়র বলেন, “কর আদায়ের কাজ শুরু হলে পুরসভার অনেক উপকার হবে।” এদিন বোর্ড মিটিঙে বিরোধী দলের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের আশ্বাস নিয়ে পুরসভার কী করছে তা জানতে চান। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, পুরসভার যে অংশ দার্জিলিং জেলার মধ্যে পড়েছে তাঁদের মধ্যে ২ জন মারা গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে তাঁদের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জলপাইগুড়ির জেলার অংশের এলাকার বাসিন্দা এক মৃতের পরিবারের হাতে ১০ হাজার টাকা পুরসভার পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা থেকে কয়েকজন জখমকেও সাহায্য করা হয়েছে।
পুরসভার সমীক্ষায় ভূমিকম্পে ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তা প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ রাজ্য সরকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হয়েছে। মেয়র বলেন, “টাকা এলেই ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকেও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হচ্ছে বলে মেয়র জানান। এদিন বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা বেনিফেসিয়ারিরা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তোলেন সিপিএম কাউন্সিলর শরদিন্দু চক্রবর্তী। পুরসভার মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক জানান, টাকা না বরাদ্দ হওয়াতেই সমস্যা হয়েছে। পুরসভা সমস্ত চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।” |