রাজ্যের আবাসনমন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় রবিবার দাবি করেছিলেন, ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে’ বাঁকুড়ার জয়পুরের সিপিএম সমর্থক খুন হয়েছেন। ওই রাতেই ওই খুনের ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক স্তরের এক নেতা-সহ ছ’জনকে ধরল পুলিশ। এলাকা থেকে উদ্ধার করা হল ১০০ রাউন্ড কার্তুজ।
আর ‘হামলা’ প্রসঙ্গে সোমবার একেবারে ‘অন্য কথা’ বলেছেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি তথা বাঁকুড়ার বর্তমান বিধায়ক কাশীনাথ মিশ্র। তাঁর দাবি, “সিপিএম ছেড়ে সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুষ্কৃতীরাই সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালিয়ে আমাদের দলের বদনাম করছে। দলের জেলা সভাপতি শ্যাম মুখোপাধ্যায়ের শক্ত হাতে এ সব লোকেদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।” এ দিন বহু বার মোবাইলে চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামবাবু।
জয়পুরের হিজলডিহা গ্রামের সিপিএম সমর্থক বলরাম সিংহকে রবিবার ভোরে গুলি করে খুন করে আততায়ীরা। গুলিবিদ্ধ হন তাঁর বৌদি। মারধর করা হয় পড়শিদের। আহত হন ৬ জন। আক্রান্ত পরিবারগুলির পক্ষে শীতল সিংহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জেলার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার জানান, রবিবার রাতেই বলরাম সিংহ হত্যায় জড়িত অভিযোগে ছ’জনকে ধরা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, হিজলডিহা থেকে সুকুমার টুডু, নবকুমার হাজরা, রামকৃষ্ণ চৌধুরী, অনুপ হাঁড়ি, মলয় মিদ্যা এবং ধাড়িসায়ের গ্রাম থেকে শ্যামল মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লাগোয়া মুরলীগঞ্জ গ্রামে একটি ঝোপের ভিতর থেকে কার্তুজগুলি উদ্ধার করা হয়। ধৃতদের মধ্যে সুকুমার টুডু তৃণমূলের তফসিলি জাতি-উপজাতি ও অনগ্রসর সেলের জয়পুর ব্লক সভাপতি। এ দিন বিষ্ণুপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। হিজলডিহায় হত্যাকাণ্ডের পরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্র অভিযোগ করেছিলেন, ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীরাই ঘটনায় জড়িত। এ দিন তৃণমূলের জয়পুর ব্লক সভাপতি রবিউল মিদ্যা বলেন, “ধৃতেরা আমাদের দলের কর্মী-সমর্থক। সিপিএমের কর্মীরা নিজস্ব কোন্দলের জেরে বলরামকে খুন করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। মিথ্যা অভিযোগেই পুলিশ ওই ছ’জনকে ধরেছে।” পক্ষান্তরে, এ দিন নিহত বলরাম সিংহ এবং অন্য আক্রান্তদের বাড়ি ঘুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের পাল্টা অভিযোগ, “পুরোটাই তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের কাজ। হিজলডিহা গ্রাম ঘিরে যে ভাবে তারা যথেচ্ছ তাণ্ডব চালিয়েছে, তা নজিরবিহীন।” |