এই জেলার গায়ে ‘পিছিয়ে পড়া’ তকমা দীর্ঘদিনের। রাজ্যের অনুন্নত জেলার তালিকায় একেবারে উপরের দিকে নাম আছে। তাতে সদর শহরকে সাজাতে বাধা কী? বলছেন খোদ পুরুলিয়ার জেলাশাসকই।
পুরুলিয়া শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনিই। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, পুরুলিয়ায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়া হবে। শহরের উপকণ্ঠে আধুনিক হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা সাহেববাঁধ সরোবরকে কেন্দ্রীয় সরকার ‘জাতীয় সরোবর’-এর মর্যাদা দিয়েছে। শহরে যাতায়াত বাড়ছে দূর-দূরান্তের মানুষজনের। জেলাশাসক অবনীন্দ্র সিংহের স্পষ্ট বক্তব্য, “শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এটাই প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত।” শহরের প্রধান রাস্তার ধারে নোংরা-আবর্জনার স্তূপ, যাতায়াতের পথে দিনের পর দিন এমন ছবি দেখতে অভ্যস্ত শহরবাসীর জন্য জেলা প্রশাসনের নতুন স্লোগান ‘অপারেশন ক্লিন অ্যান্ড গ্রিন পুরুলিয়া’। |
সৌন্দর্যায়নের এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে আগামী ৬ নভেম্বর থেকে প্রশাসন পথে নামছে। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান জেলাশাসক। তাঁর কথায়, “শহরকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন করে তোলার লক্ষ্যে শহরবাসীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে আমরা ৬ তারিখ থেকে কাজ শুরু করব। শহরবাসীর কাছে প্রশাসন অনুরোধ রাখবে, পরিবার পিছু অন্তত এক জন যেন এক ঘণ্টা করে সময় দেন।” বস্তুত, সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে শহরকে সুন্দর রাখার দায়বদ্ধতা প্রত্যেকের ভিতরেই তৈরি হবে বলে প্রশাসন মনে করছে। পাশাপাশি শহরকে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন করতে তুলতে নাগরিকদের কাছ থেকে অনধিক এক হাজার শব্দের লিখিত প্রস্তাবও চাইছে প্রশাসন। জেলাশাসক এ দিন বলেন, “যাঁর প্রস্তাব সেরা বলে বিবেচিত হবে, তাঁকে প্রশাসন আর্থিক পুরস্কার দেবে। ওই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছেও পাঠানো হবে।” তিনি জানান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুরসভার সঙ্গে প্রশাসনের ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে। সকলেই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান তারকেশ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাস, “শহরের সৌন্দর্যায়ন প্রশ্নে পুরসভা অবশ্যই তার দায়িত্ব পালন করবে এবং নাগরিকদের সচেতন করতেও উদ্যোগী হবে।” পুরুলিয়ার পরে পর্যায়ক্রমে রঘুনাথপুর ও ঝালদা পুর-শহরেও সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হবে বলে জেলাশাসক জানিয়েছেন। |