মহা সমারোহে এ বারেও সোনামুখীতে কালী প্রতিমার বিসর্জন হল। রবিবার সন্ধ্যায় এক সঙ্গে ১৯টি প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। এই দীর্ঘ শোভাযাত্রায় মাতামাতিও ছিল চোখে পড়ার মতন। এই শোভাযাত্রা দেখতে বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসেছিলেন। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশের কড়া বন্দোবস্ত ছিল।
শুধু বিসর্জন পর্বই নয়। সোনামুখীর কালী নামও অভিনবত্বে ভরা। তেমনই কয়েকটি বিশেষ নাম হল সার্ভিস কালী, মাইতো কালী, তেমাথা কালী ইত্যাদি। প্রতিমাগুলিও সুউচ্চ। কেউ মানত করে চাকরি পাওয়ার পরে শুরু করেন সার্ভিস কালী। কথিত রয়েছে, বর্গী আক্রমণের সময় এলাকাবাসী মা কালীর স্মরণাপন্ন হয়েছিলেন। কালীর উপর বিশ্বাস রেখে বলেছিলেন, ‘মা-ই তো রক্ষা করবেন’। বর্গী আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার পরে সেই কালীর নাম হয়ে যায়, মাইতো কালী। শহরের তেমাথায় কালীমন্দির বলে সেখানকার প্রতিমার নাম তেমাথা কালী। |
এই সব কালী প্রতিমার পুজোয় মেতেছিল সোনামুখী শহর। দেবীর মাহাত্ম্যের সঙ্গে দৃষ্টিনন্দনীয় আলোকসজ্জা-দেখতে পুজোর রাতেও প্রচুর ভক্ত বাইরে থেকেও এসেছিলেন। বিসর্জন নিয়েও ছিল তেমনই ভিড়। বিসর্জনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পুজো কমিটিরগুলির আতবাজির প্রদর্শণী। আতসবাজির হরেক রং সোনামুখীর আকাশ ভরে রেখেছিল। সেই সঙ্গে নানা বাদ্যযন্ত্র তো শোভাযাত্রায় ছিলই। তার পিছনে ছিল মাটির ছবির প্রদর্শনী। সেই প্রদর্শনীতে ছিল অনশনরত অন্না হজারে থেকে রামকৃষ্ণদেবের ‘যত মত তত পথ’-এর আধ্যাত্ম ভাবনাও। ভাসান উপলক্ষে রাতভর ভিড় ছিল শহরের চা-মিষ্টির দোকানগুলিতে। বসেছিল পাঁপড়, তেলেভাজা ও নানা মুখোরেচক খাবারের দোকান। রবিবার আলোর রোশনাইয়ে ভাসতে ভাসতে সোমবার সকালে শোভাযাত্রা পৌঁছয় স্বর্ণময়ীতলায়। তার পরে দশেরবাঁধে একে একে বিসর্জন পর্ব শেষ হয় এ দিন দুপুরে। নিরঞ্জন শেষে সোনামুখী কালী ভাসান সমন্বয় কমিটির সভাপতি তথা সোনামুখীর পুরপ্রধান কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাজার হাজার মানুষের উন্মাদনায় নিবির্ঘ্নে শেষ হয়েছে ভাসান পর্ব।” |