সরবারহ করা চাল, ডাল নিম্নমানের। রান্নার পরে শিশুরা তা মুখে তুলতে পারে না। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় শিশু বিকাশ প্রকল্পের অধীন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির কর্মী ও সহায়িকারা দীর্ঘদিন ধরেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল অভিভাবকদেরও। বার বার সংশ্লিষ্ট মহলে দরবার করেও এ ব্যাপারে কোনও সুরাহা না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে নামলেন অঙ্গলওয়াড়ির কর্মী ও সহায়িকারা।
সোমবার বনগাঁ শহর এলাকার ৬১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকারা মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন। কেন্দ্রগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁদের নানা অসুবিধার কথাও মহকুমাশাসককে জানয়ছেন তাঁরা। স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি এ দিন একদিনের কর্মবিরতিও পালন করেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী ও সহায়িকারা। এর ফলে এ দিন মহকুমার সমস্ত অঙ্গনওয়ানি কেন্দ্র বন্ধ ছিল। অঙ্গলওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি চালাতে গিয়ে যে সমস্ত অসুবিধা হচ্ছে সে সব এবং রান্নার জন্য নিম্নমানের চাল ডাল সরবরাহ নিয়ে কর্মী ও সহায়িকারা একাধিক অভিযোগ করেছেন। (১) শিশুদের খিচুড়ি খাওয়ানোর জন্য যে চাল-ডাল কেন্দ্রগুলিতে সরবরাহ করা হয়, দেখা গিয়েছে তাতে ২৫ কিলোগ্রামের বস্তায় ৪ থেকে ৫ কিলোগ্রাম ওজনে কম থাকে। (২) সরবরাহকৃত চাল-ডালের মান প্রায়ই নিম্নমানের হয়। এমনকী চাল-ডালের মধ্যে পোকমাকড়, কাঁকর, মাটি মেশানো থাকে। (৩) কেন্দ্রগুলিতে চাল-ডাল সময়মতো সরবরাহ না হওয়ার জন্য মাঝে মাঝেই রান্না বন্ধ রাখতে হয়। ফলে শিশুদের খাওয়ানো যয় না। (৪) চলতি বছরের ২৬ জুন ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা পালস পোলিও কর্মসূচিতে অংশ নেন। কিন্তু সে জন্য কোনও পারিশ্রমিক তাঁরা পাননি।
তৃণমূল অঙ্গলওয়াড়ি মহিলা সমিতির সভানেত্রী বনলতা ঘোষ বলেন, “নিম্নমানের চাল-ডাল সরবরাহ নিয়ে সমস্যা তো রয়েইছে। তা ছাড়া পালস পোলিও কমর্সূচিতে অংশ নিলে আমাদের পারিশ্রমিক দেওয়ার ব্যবস্থা হোক।
মহিলা সমিতি সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৩৫ এবং ৩৮ নম্বর কেন্দ্রে গত দেড় মাস ধরে চাল সরবরাহ না থাকার কারণে রান্না বন্ধ। বনগাঁ শিশুবিকাশ প্রকল্পের অফিস বর্তমানে স্থানীয় বিচুলিহাটায়। সম্প্রতি অফিসটি পশ্চিমপাড়ায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কর্মীও সহায়িকাদের বক্তব্য, ওই এলাকা শহরের কেন্দ্রস্থল থেকে দূরে লহওয়ায় যোগাযোগ ও যাতাায়াতের ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হবে। অফিসটি যাতে যোগাযোগ ও যাতায়াতের সুবিধাযোগ্য স্থানে করা যায় সে জন্যও তাঁরা মহকুমাশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী-সহায়িকাদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে মহকুমাশাসক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওঁদের অভিযোগগুলি শুনেছি। আগামী শুক্রবারের মধ্যে অভিযোগগুলির বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |