দীপাবলির আলোতেই অন্ধকার কেটেছে সাহেবরামপুরের। বছর দশেক ধরে গ্রামের শ্মশানে পুজো হয়। বসে জমজমাট মেলাও। আর সেই মেলায় সামিল হন এলাকার প্রতিটি মানুষ। এক কালে যে এলাকায় চুরি ছিনতাইয়ের ভয়ে মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোতেন না, এখন কালীপুজো ঘিরে আলোর উৎসবে মাতে গ্রাম। উৎসব আর মেলেমেশায় অন্ধকার কেটেছে এলাকায়। কমেছে চুরি-ডাকাতির ঘটনাও।
লোক মুখে বিভিন্ন গল্প শোনা যায় সাহেবরামপুর শ্মশান নিয়েও। বছর পনেরো আগেও এক সময়ে ডাকাতদের রমরমা ছিল এলাকায়। চুরি-ছিনতাইয়ের ভয়ে রাস্তায় বের হতেন না মানুষ। দিনে-দুপুরে পথ চলতি মানুষের থেকে টাকা পয়সা ছিনতাইয়ের ঘটনা খুবই সাধারণ ঘটনা ছিল। তবে এখন সে-সব আর হয় না। এখন রাত বিরেতেও দরকার পড়লে বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পান না কেউ। |
বছর দশেক আগে এলাকায় কালীপুজো শুরু হয়েছে। আর দীপান্বিতার আলোয় মানুষের মিলন ক্ষেত্র হয়েছে সাহেবরামপুর। সাহেবরামপুর বিল আসলে শেয়ালমারি নদীর শাখা। বিলের ধার ঘেঁষা কিছুটা জায়গা কিছু দিন আগে পর্যন্তও জনবসতিহীন ছিল। তবে ক্রমে ওই এলাকায় বসতি বেড়েছে। শিক্ষক মোহিত দেবনাথ বলেন, “এই শ্মশান নিয়ে অনেক গল্প শুনেছি। পথ চলতি মানুষের টাকা-গয়না ছিনিয়ে নেওয়া হত ওই এলাকায়। তবে এখন সে সব আর হয় না।”
মুসলিম প্রধান ওই এলাকায় শ্মশানকালীর মেলা আক্ষরিক ভাবেই মিলন মেলার চেহারা নিয়েছে। জাতি ধর্মের বেড়া ডিঙিয়ে মেলায় ভিড় জমান সকলেই। বাঁশবন ঘেরা এই শ্মশানকালীর মেলায় বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা। পুজো কমিটির সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, “কেবল কালীপুজোই নয়, এখানে দোলের সময়েও দিন দশেক ধরে উৎসব হয়। সেই সময়েও প্রচুর মানুষের ভিড় হয় এলাকায়। এসব মিলিয়ে মিলনমেলার দৌলতে এলাকার আতঙ্কের পরিবেশ বদলেছে।” সাহেবরামপুরের এক মিষ্টি ব্যবসায়ী সৌরেন্দ্র সাহা বলেন, “এক সময়ে মানুষ যে এলাকায় পা রাখতে ভয় করত, এখন সেই জায়গায় জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। চোখের সামনে এই বদল দেখেছি। বিশ্বাস হয় না।” |