যান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে উদ্যোগ পুরসভার
হরমপুর শহরের যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে রাজ্য পুলিশের আইজি-র কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বহরমপুর পুর-কর্তৃপক্ষ। ওই প্রস্তাবের কথা জানিয়ে আইজি-র কাছে গত ২৭ অক্টোবর ফ্যাক্সবার্তা পাঠানো হয়েছে। তার আগে অবশ্য পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলে সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “বহরমপুরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে কর্মীর অভাব রয়েছে। এ জন্য চুক্তিভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি পুর-কর্তৃপক্ষ ওই কর্মীদের মাসিক ভাতার ৫০ শতাংশ বহন করবে। আর বাকি ৫০ শতাংশ ভাতা সরকার বা প্রশাসনকে বহন করার কথা লিখিত ওই প্রস্তাবে জানানো হয়েছে।” তাঁর কথায়, “বহরমপুরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থার করুণ দশা। নাগরিক স্বার্থে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার হাল ফেরাতে জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছে বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।”
এর আগে পুজোর সময়ে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে পুরসভার তরফে বহরমপুর পুর-এলাকায় ৬৫ জন কর্মী নিয়োগ করা হয়, যাঁরা ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে পুজোর সময়ে নির্বিঘ্নে প্রতিমা দর্শনে কোনও অসুবিধার মুখে পড়তে হয়নি পুর-নাগরিকদের। নীলরতনবাবু বলেন, “পুজোর সময়ে পুর-এলাকার বিভিন্ন জায়গায় টোল-ট্যাক্স আদায় বন্ধ ছিল। ওই টোল-ট্যাক্স আদায়কারী থেকে পুরসভার বিভিন্ন দফতর থেকে বাছাই করে ৬৫ জন কর্মীকে শহরের ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হয়। তারা রাস্তায় নেমে বহরমপুর ট্র্যাফিক ও বহরমপুর পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণ করে।” এতে উৎসাহিত হয়ে আইজি-র কাছে ওই প্রস্তাব পাঠিয়েছে পুরসভা।
নিজস্ব চিত্র
এদিকে গত কয়েক বছরে বহরমপুর শহরের জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। বহরের দিক থেকেও বেড়েছে বহরমপুরের মানচিত্র। ফলে বহরমপুর শহর এলাকা এখন বিস্তৃত হয়েছে ভাকুড়ি থেকে বানজেটিয়া পর্যন্ত। কিন্তু শহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা সেই মান্ধাতার আমলে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। শহরে প্রতি দিন লাফিয়ে বাড়ছে রিকশার সংখ্যা। আগে প্রত্যন্ত গ্রামে যন্ত্রচালিত লছিমন চললেও এখন তা শহরে ঢুকছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের যানবাহন।
কিন্তু বহরমপুর ট্র্যাফিক পুলিশের পরিকাঠামো বলতে সর্বসাকুল্যে এক জন করে ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর, চার জন এএসআই, ১২ জন কনস্টেবল এবং ৪৮ জন হোমগার্ড। ডেপুটি পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) আফসারউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বহরমপুর ট্র্যাফিক পুলিশের কিছুটা হলেও পরিকাঠামোগত অভাব রয়েছে। বিশেষ করে প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী সংখ্যা কম রয়েছে। গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে পুরসভার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার বিষয়টি সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সেক্ষেত্রে ওই কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগানো যেতে পারে।”
বহরমপুরের মহকুমাশাসক অধীরকুমার বিশ্বাস বলেন, “শহরের ভেতর দিয়ে এখন পণ্যবাহী লরি ও বাস যাতায়াতের ফলে নাভিশ্বাস উঠেছে নাগরিকদের। বিষয়টি নিয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। এছাড়াও বিভিন্ন বৈঠকে ট্র্যাফিক পুলিশের পরিকাঠামোর দুর্বলতাগুলোও নিয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনও ভাবে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটলে মানুষ চলাফেরা করে শান্তি পাবেন।”
পুরসভার প্রস্তাব বিষয়ে পূর্ত দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা জেলার মন্ত্রী তৃণমূলের সুব্রত সাহা-র সাফ কথা, “এক্ষেত্রে সরকারের নিয়ম-কানুন আমার জানা নেই। তবে শহরের যে কোনও উন্নয়নে আমাদের সমর্থন রয়েছে।” মন্ত্রীর কথায়, “যানজটের পাশাপাশি পুরসভার বিভিন্ন পরিষেবা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে পুর-নাগরিকদের শুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের দিকটি এখানে উপেক্ষিত রয়েছে বলে আমার মনে হয়। এছাড়াও শহরে বিভিন্ন প্রান্তে বহুতল বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এবং তারা ভূগর্ভস্থ জল তুলছে। কিন্তু এক্ষেত্রে পুরসভার কোনও নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে যানজটের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি পরিবহণ মন্ত্রীর সঙ্গে আমরা কথা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.