নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পিচ-আতঙ্ক এ বার তাড়া করতে শুরু করল বাংলা ক্রিকেটকে।
শুধু মহেন্দ্র সিংহ ধোনি নন, ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে প্রবল অসন্তুষ্ট বাংলার ক্রিকেটাররাও। আর বাহাত্তর ঘণ্টা পর নেমে পড়তে হচ্ছে রঞ্জি ট্রফির প্রথম ম্যাচে। বিপক্ষ, পার্থিব পটেলের গুজরাত। তার আগে পিচ দেখে আঁতকে উঠছেন ক্রিকেটাররা। কেউ বলছেন, ‘খোঁয়াড়’। কেউ প্রশ্ন তুলছেন, হাইকোর্ট মাঠের সঙ্গে আর তফাত রইল কোথায় ইডেনের? কারও আবার মনে হচ্ছে, এই যা পিচ তাতে বিপক্ষের কুড়ি উইকেট তুলে জেতা অসম্ভব। যা দাঁড়াচ্ছে, ইডেনের পিচ নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত।
সোমবার প্র্যাক্টিসের শুরুতেই দেখা যায়, বাংলার কোচ ডব্লিউ ভি রামন পিচ নিয়ে কিছু বলছেন ইডেনের কিউরেটর প্রবীর মুখোপাধ্যায়কে। কিছুক্ষণ পর সেখানে হাজির হন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। তিনিও আলাদা করে কথা বলেন কিউরেটরের সঙ্গে। যা খবর, তাতে ম্যাচের চার দিন পিচে কিছু ঘাস ছেড়ে রাখতে বলেছেন সৌরভ। কিন্তু তাতেও কত দূর কী হবে, তা নিয়ে ধন্ধে বাংলা ক্রিকেটাররা।
সিএবি-র নিষেধাজ্ঞায় সরকারি ভাবে মুখ খোলা বারণ। কিন্তু বেসরকারি ভাবে নিজেদের ক্ষোভ আটকে রাখেননি ক্রিকেটাররা। বাংলার নামী এক পেসার যেমন বললেন, “বল তো প্রায় পৌঁছচ্ছেই না। ঘাস যদি শেষ পর্যন্ত থাকে, তাতেও লাভ নেই। কারণ উইকেটটা আদতে স্কোয়ার টার্নার।” আর এক তরুণ ক্রিকেটার প্র্যাক্টিস শেষে বেরনোর সময় বলে গেলেন, “হাইকোর্ট মাঠের সঙ্গে কোনও তফাত দেখলাম না। খুব খারাপ উইকেট। হোম অ্যাডভান্টেজ এ বার গেল।” আর সৌরভ? বুদ্ধ সার্কিট থেকে ফিরেই এ দিন চুটিয়ে মহড়া সারলেন রঞ্জির। নয়ডায় গতির যুদ্ধ তো দেখলেন, ইডেনের বাইশ গজের ‘গতি’ কেমন? অল্প হেসে সৌরভের উত্তর, “ইডেনের বাইশ গজের গতি, ইডেনের বাইশ গজের মতোই।”
পিচ নিয়ে সিএবি-র ঢিলেমিও চলছে। পিচের হাল এমন কেন হল, তা নিয়ে এ দিন কিউরেটরের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ছিল সিএবি প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার। কিন্তু সেই বৈঠক হয়নি। কারণ জানতে চাওয়ায় সিএবি প্রেসিডেন্ট বললেন, “কতগুলো কাজে ব্যস্ত থাকায় আজ প্রবীরবাবুর সঙ্গে কথা হয়নি। দু’এক দিনের মধ্যেই এ নিয়ে বসব। হয়তো মঙ্গলবারই।” সংস্থার একটি প্রভাবশালী অংশ আবার মনে করছে, অভিজ্ঞ মহেশ মালি এবং অনাদি সাহুকে সরিয়ে দেওয়ার ফলেই এ জিনিস হচ্ছে। মতপার্থক্য হওয়ায় বেশ কিছু দিন আগে এই দু’জনকে সরিয়ে দিয়েছিলেন কিউরেটর। এখন বিপদের দিনে মহেশকে ফেরানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সিএবি যুগ্ম-সচিব বিশ্বরূপ দে বললেন, “কিউরেটর যদি মনে করেন, তা হলে মহেশকে ফেরাতে সমস্যা নেই সিএবির।” আর কিউরেটর নিজে কী বলছেন? ধোনির পর বাংলার ক্রিকেটারদের বিক্ষোভের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে প্রবীরবাবুর উত্তর, “আমি এ নিয়ে একটা কথাও বলব না। আমি নিজের কাজটা জানি। সেটাই করছি।” |