সার্কাস হোক বা কোনও মেলা। মাঠ একটিই। জাতীয় সড়কের পাশের গাঁধী মোড় ময়দান। কিন্তু ব্যবহারের পরে মাঠ পরিষ্কার করতে উদ্যোগী হন না আয়োজকেরা। তার উপর এ বারের অতিরিক্ত মাত্রার বর্ষণ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। মাঠে সবুজের বালাই নেই। এবড়ো খেবড়ো মাঠ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে স্পঞ্জ আয়রনের বর্জ্য। পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান জানান, যত দ্রুত সম্ভব দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে মাঠে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই মাঠে প্রায় দেড় মাস ধরে এক সার্কাস কোম্পানি তাঁবু গেড়েছিল। হাতি, জলহস্তি-সহ অন্য জন্তুদের থাকার জন্য আলাদা বন্দোবস্ত হয়। তাছাড়া কর্মীদের থাকার জন্য ঘর, রান্নাঘরও তৈরি হয়েছিল। বিশাল এলাকা জুড়ে গ্যালারি-সহ সার্কাস প্রদর্শনের তাঁবু তো ছিলই। পুরো আয়োজন করতে মাঠটি জুড়ে ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। সার্কাসের তাঁবু গুটিয়ে নেওয়ার পরে সেই গর্তগুলি আর ঠিকমতো ভরাট করা হয়নি। তার উপর বৃষ্টি পড়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। |
দুর্গাপুরের গাঁধী মোড় ময়দানে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সার্কাস চলে যাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যে ওই মাঠে গাড়ি মেলার আয়োজন করে একটি বেসরকারি সংস্থা। মাঠের অবস্থা দেখে অসুবিধায় পড়েন উদ্যোক্তারা। মাঠ ভর্তি কাদা। জল জমে রয়েছে যেখানে সেখানে। লাগাতার বৃষ্টিতে কী ভাবে ওই মাঠে মেলার আয়োজন করা যাবে তা ভেবে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। শেষ পর্যন্ত তড়িঘড়ি স্পঞ্জ আয়রন কারখানার বর্জ্য এনে খাল ও কাদা বোজানোর ব্যবস্থা করেন তাঁরা। সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “কী ভাবে যে মেলার আয়োজন করেছি আমরাই জানি। কত আগে মাঠ ‘বুকিং’ করেও এই হাল। মাঠ মেলার উপযুক্ত করতে গিয়ে আমাদের ব্যয় বেড়ে গিয়েছিল।”
গাড়ি মেলা শেষ করে ফিরে গিয়েছেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু স্পঞ্জ আয়রন কারখানার বর্জ্য তাঁরা সরিয়ে নেননি। মাঠ জুড়ে সেগুলি পড়ে আছে আজও। ঘাস ঢাকা পড়ে গিয়েছে। খালি পায়ে হাঁটার কোনও উপায় নেই। পরিস্থিতি এমনই যে ওই মাঠে নতুন করে কোনও অনুষ্ঠান আয়োজন করতে গেলে বহু কাঠ-খড় পোড়াতে হবে উদ্যোক্তাদের। এলাকার বাসিন্দা সুদীপ পাত্র, বর্ণালী পাত্ররা বলেন, “আগে ওই মাঠে সকালে বিকেলে বেড়ানো যেত। কিন্তু এখন মাঠটির যা অবস্থা তাতে আর ঢোকা যায় না। অবিলম্বে মাঠটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা না হলে খুব সবুজ একেবারে হারিয়ে যাবে মাঠ থেকে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এমনিতে কোনও অনুষ্ঠান বা মেলার আয়োজন করা হলে উদ্যোক্তাদেরই বলা হয় মাঠ পরিষ্কার করে দিতে। তার পরেও কাজ বাকি থাকলে পুরসভার তরফে করে নেওয়া হয়। কিন্তু এ বার লাগাতার বৃষ্টি এবং একের পর এক অনুষ্ঠানের কারণে সেই ভাবে মাঠটি রক্ষণাবেক্ষণের সময় পাওয়া যায়নি। পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান বলেন, “মাঠটির অবস্থা যে এত খারাপ তা জানা ছিল না। দ্রুত দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে মাঠে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।” |